বাংলাদেশ

আগামীকাল থেকে সচিবালয়ে নিষিদ্ধ হচ্ছে একবার ব্যবহার উপযোগী প্লাস্টিক

Advertisement

আগামী রবিবার থেকে সচিবালয়ে একবার ব্যবহার উপযোগী প্লাস্টিক বা সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক (এসইউপি) ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ হবে। এই সিদ্ধান্তের আওতায় মন্ত্রণালয়, সভা-সেমিনার এবং দর্শনার্থীদের ক্ষেত্রেও প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় থেকে শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সিদ্ধান্ত ও কার্যকরী নির্দেশনা

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভায় সব মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সচিবালয়ে এসইউপি ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। দর্শনার্থীদের প্রবেশপথে তল্লাশি চালানো হবে এবং প্লাস্টিক পণ্য থাকলে তা কাগজের বা পুনর্ব্যবহারযোগ্য ব্যাগে প্রতিস্থাপন করা হবে।

সভা-সেমিনারে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের বোতল, কাপ, প্লেট, চামচ ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে না। পলিথিনের পরিবর্তে পাটজাত, কাপড় বা পুনর্ব্যবহারযোগ্য ব্যাগ ব্যবহার বাধ্যতামূলক। সরকারি কেনাকাটার ক্ষেত্রেও প্লাস্টিকের বিকল্প অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে একজন ফোকাল পারসন ও নিষেধাজ্ঞার বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণকারী কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সচিবালয়কে সম্পূর্ণ এসইউপি মুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।

সরকার ইতিমধ্যেই ১৭ ধরনের সামগ্রীকে ‘সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিকের তৈজসপত্র, চকলেটের মোড়ক, প্লাস্টিকের দাওয়াত কার্ড ও ব্যানার, পাতলা প্লাস্টিক মোড়কযুক্ত পণ্য, প্লাস্টিক বোতল ও ক্যাপসহ বিভিন্ন সামগ্রী।

গত বছরের অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে সুপারশপ ও কাঁচাবাজারে পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। এবার সচিবালয়ে এই নীতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে পরিবেশবান্ধব সংস্কৃতি প্রচলনের চেষ্টা করা হচ্ছে।

প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া

নিষিদ্ধ হওয়ার ফলে সচিবালয়ে দৈনন্দিন কার্যক্রমে ছোট পরিবর্তনগুলো ঘটবে। সভা-সেমিনার ও সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়ায় প্লাস্টিকের পরিবর্তে বিকল্প পণ্য ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ কমবে।

পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে এই উদ্যোগ শুরু হলে সাধারণ জনগণও প্লাস্টিক কম ব্যবহারের প্রতি সচেতন হবে। এটি এক ধরনের রোল মডেল হিসেবে কাজ করবে, যাতে অন্যান্য অফিস ও প্রতিষ্ঠানগুলোও প্লাস্টিক ব্যবহারে সচেতন হবে।

প্রশাসনিক প্রস্তুতি

সচিবালয়ের প্রবেশপথে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন বোর্ড বসানো হয়েছে। এছাড়া, ফোকাল পারসন ও পর্যবেক্ষণকারী কমিটি নিয়মিত তদারকি করবে। দর্শনার্থীদের জন্য বিকল্প ব্যাগ, বোতল ও অন্যান্য সরঞ্জামের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

সরকার আশা করছে, এই উদ্যোগে দেশের সরকারি কার্যক্রমে পরিবেশবান্ধব সংস্কৃতি বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া, প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে দেশের পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে।

বিশ্লেষণ

বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক দূষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। সচিবালয়ে এসইউপি নিষিদ্ধের মাধ্যমে দেশের সরকারি অফিসগুলোতে পরিবেশবান্ধব সংস্কৃতি গড়ে উঠতে পারে। এটি শুধু সরকারি কর্মচারীদের সচেতন করবে না, বরং দর্শনার্থী ও সাধারণ জনগণকেও প্লাস্টিক কম ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সরকারি উদ্যোগ ও সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সামগ্রিকভাবে দেশের প্লাস্টিক দূষণ কমানো সম্ভব। পুনর্ব্যবহারযোগ্য সামগ্রী ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশ সুরক্ষায় বড় পরিবর্তন আনা সম্ভব।

আগামীকাল থেকে সচিবালয়ে একবার ব্যবহার উপযোগী প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করা হবে। এটি পরিবেশ বান্ধব নীতি বাস্তবায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। সরকারি উদ্যোগের সঙ্গে সবাই মিলে সচেতন হলে দেশের পরিবেশ দূষণ কমানো সম্ভব।

এম আর এম – ১৬১৩,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button