জিম্মি ইসরায়েলি তরুণীকে রেডক্রসের কাছে হস্তান্তর, মুক্তি পাচ্ছে আরও কয়েকজন
জিম্মি ইসরায়েলি তরুণীকে রেডক্রসের কাছে হস্তান্তর, মুক্তি পাচ্ছে আরও কয়েকজন
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস আজ বৃহস্পতিবার তাদের হাতে জিম্মি থাকা ইসরায়েলি সামরিক পর্যবেক্ষক আগাম বারগারকে (২০) মুক্তি দিয়েছে। তাঁকে রেডক্রসের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। হামাস আরও দুই ইসরায়েলি নাগরিক ও পাঁচ থাই নাগরিককে মুক্তি দিতে যাচ্ছে, যা ইসরায়েল সরকার নিশ্চিত করেছে।
মুক্তি পাওয়া জিম্মিরা
আগাম বারগার একজন নারী। তাঁর পাশাপাশি আরেকজন ইসরায়েলি নারী বেসামরিক নাগরিক আরবেল ইয়েহুদ (২৯) মুক্তি পেতে পারেন। এছাড়া ৮০ বছর বয়সী ইসরায়েলি নাগরিক গাদি মোসেসও মুক্তি পাচ্ছেন।
বন্দিবিনিময়ের চুক্তি
এটি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় তৃতীয় ধাপের বন্দিবিনিময়। এই ধাপে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ১১০ ফিলিস্তিনিকে ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হবে। হামাসের কাছ থেকে মুক্তি পেতে যাওয়া থাই জিম্মিদের নাম এখনো প্রকাশ করা হয়নি। তবে জানা গেছে, তাঁরা কৃষিশ্রমিক হিসেবে ইসরায়েলে কাজ করতেন এবং হামাস তাঁদের আটক করেছিল।
থাইল্যান্ডের অবস্থান
থাইল্যান্ডের সরকার জানিয়েছে, তাদের ছয়জন নাগরিক এখনও গাজায় জিম্মি রয়েছে। তাঁদের মধ্যে ওয়াতচারা স্রিয়ুআন, বান্নাওয়াত সিয়াথো, সাথিয়ান সুওয়ান্নাখাম, নাত্তাপং পিন্তা, পংসাক তান্না এবং সুরাসাক লামনাউ অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া, সুদথিসাক রিনথালাক এবং সোনথায়া ওকখারাসরি নামের দুই থাই জিম্মি মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনিরা
ইসরায়েলের কাছ থেকে মুক্তি পেতে যাওয়া ১১০ ফিলিস্তিনি কারাবন্দীর নামও প্রকাশ করা হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে কমপক্ষে ৩০ জন নারী ও শিশু রয়েছে। এছাড়া, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দীও আছেন।
গত ১৯ জানুয়ারি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর তৃতীয় ধাপে বন্দিবিনিময়ের অংশ হিসেবে তাঁদের ছাড়া হবে। ইতিমধ্যে চুক্তির আওতায় দুই ধাপে ইসরায়েলি কারাগার থেকে ২৯০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তির বিনিময়ে সাতজন নারীকে জীবিত মুক্তি দিয়েছে হামাস।
মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের উচ্ছ্বাস
মুক্তি পাওয়া কয়েকজন ইসরায়েলি জিম্মি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। তাঁরা মুক্তির পর নতুন জীবন শুরু করার আশায় উজ্জীবিত।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
ইসরায়েল সরকার জানিয়েছে, আগামী শনিবার চতুর্থ ধাপে বন্দিবিনিময় হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালায়, যাতে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়। হামাসের হামলার জবাবে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় হামলা শুরু করে, যার ফলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ৪৭ হাজার ৩১০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।
এই বন্দিবিনিময় প্রক্রিয়া ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান সংঘাতের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আশা করা হচ্ছে, এই প্রক্রিয়া দুই পক্ষের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার দিকে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে।
আরও পড়ুন