আসছে গ্রামীণ টেলিকমের ডিজিটাল ওয়ালেট
আসছে গ্রামীণ টেলিকমের ডিজিটাল ওয়ালেট
গ্রামীণ টেলিকম নতুন একটি ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা নিয়ে আসছে, যা ‘সমাধান সার্ভিসেস লিমিটেড’ দ্বারা পরিচালিত হবে। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সমাধান সার্ভিসেস লিমিটেডকে পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসপি) হিসেবে প্রাথমিক অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
লাইসেন্সের জন্য আবেদন
২০২১ সালের ১৬ নভেম্বর পিএসপি লাইসেন্সের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রথম আবেদন করে সমাধান সার্ভিসেস। প্রতিষ্ঠানটি প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দেওয়ার পরও বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত দেরি করে। গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংক এনওসি (অনাপত্তিপত্র) মঞ্জুর করে, যা সমাধান সার্ভিসেসের পিএসপি লাইসেন্স পাওয়ার পথ সুগম করে।
বিলম্বের কারণ
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের দাবি, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিশেষ করে সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে প্রক্রিয়াটি বিলম্বিত করেছিলেন। গ্রামীণ টেলিকম ও এর প্রতিষ্ঠাতা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্বেষের কারণে এই বিলম্ব হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তারা।
গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আব্দুর রউফ তালুকদার গভর্নর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
আবেদন পর্যালোচনা
গ্রামীণ টেলিকমের আবেদনটি প্রাথমিকভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগ পর্যালোচনা করে। তারা দেখেছে যে, আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানটি প্রয়োজনীয় নথি দিয়েছে। সে অনুযায়ী আবেদনটি ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে তৎকালীন গভর্নর রউফের কাছে পাঠানো হয়, কিন্তু সে সময় তা অনুমোদন দেওয়া হয়নি।
সমাধান সার্ভিসেসের বক্তব্য
গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সমাধান সার্ভিসের পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, “এনওসি পেয়েছি তবে এখনো লাইসেন্স পাইনি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এনওসি আটকে দিয়েছিল। তবে কেন দিয়েছে তা জানি না।” তিনি আরও জানান, সমাধান সার্ভিসেস ডিজিটাল পেমেন্ট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে শিগগিরই বাজারে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং অবশেষে এটি পেয়ে তারা স্বস্তি বোধ করছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের শর্ত
বাংলাদেশ ব্যাংক সমাধান সার্ভিসেসকে এক বছরের এনওসি দিয়েছে। চূড়ান্ত লাইসেন্স পেতে প্রতিষ্ঠানটিকে বেশ কয়েকটি শর্ত পূরণ করতে হবে। যেমন, প্রতিষ্ঠানটির পরিশোধিত মূলধন ২০ কোটি টাকায় উন্নীত করে তা বজায় রাখতে হবে।
প্রস্তাবিত ডিজিটাল ওয়ালেট প্রতিষ্ঠানকে অবশ্যই অর্থপাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে। দেশের তফসিলি ব্যাংকগুলোর জন্য আইসিটি নিরাপত্তা মানদণ্ড মেনে চলতে হবে। এছাড়াও, সফটওয়্যারের গুণমান ও দুর্বলতা মূল্যায়ন শেষ করতে হবে এবং ডেটা ব্যাকআপ ধরে রাখার নীতিগুলো প্রয়োগ করতে হবে।
পরিচালনা পর্ষদ
সমাধান সার্ভিসেসের পরিচালনা পর্ষদে নয় সদস্য আছেন, যারা প্রাথমিকভাবে গ্রামীণ টেলিকমের মনোনীত। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান এম শাহজাহান, যিনি গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান।
বাজারের প্রতিযোগিতা
বর্তমানে দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লাইসেন্স পাওয়া আইপে সিস্টেমস, ডি মানি বাংলাদেশ ও রিকারশন ফিনটেকসহ আটটি পিএসপি রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর রবি ও বাংলালিংকও ডিজিটাল ওয়ালেট নিয়ে আসতে আগ্রহী। দারাজ ও চালডালের মতো অনলাইন মার্কেটপ্লেস ইতোমধ্যেই পিএসপি লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছে। প্রযুক্তি
