
বগুড়ার সদর উপজেলার গোকুল খোলারঘর এলাকায় একটি মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুই যুবক নিহত হয়েছেন। রোববার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের ওই এলাকায় দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন মোকামতলার পাকুড়তলা এলাকার জিহাদ সরকার ও রহবল এলাকার আবিদ হাসান।
দুর্ঘটনার বিস্তারিত
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রাত সাড়ে ৯টার দিকে বগুড়া শহরের পাঁচ তারকা হোটেল মম ইন থেকে চারজন যুবক দুটি মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন। মোটরসাইকেলগুলি তখন অতিরিক্ত গতিতে চলছিল। গোকুল খোলারঘর এলাকায় পৌঁছালে একটি মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কে ছিটকে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই দুই যুবক মারা যান। আহত অন্য দুইজনকে স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান।
কুন্দারহাট হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, “মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দু’জন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় হাইওয়ে পুলিশের টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে।”
দুর্ঘটনার প্রেক্ষাপট
বগুড়া শহরের এই সড়কটি সাধারণত সরু এবং বেশ ব্যস্ত। অতিরিক্ত গতিতে মোটরসাইকেল চালানো এই ধরনের দুর্ঘটনার একটি সাধারণ কারণ। এলাকার বাসিন্দারা বলেন, বিশেষ করে রাতের সময়ে সড়কে পর্যাপ্ত আলোকসজ্জা ও নিরাপত্তা নেই। এছাড়া, অনেকে হেলমেট ব্যবহার না করায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।
গত কয়েক মাসে বগুড়ায় একাধিক মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে বেশিরভাগই অতিরিক্ত গতির কারণে। বিশেষ করে শহরের কেন্দ্র থেকে বাইরের গ্রামীণ এলাকাগুলোতে দ্রুতগতিতে মোটরসাইকেল চালানো ব্যাপক সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় প্রতিক্রিয়া
দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর স্থানীয়রা শোকাহত। নিহতদের পরিবারের কাছে সহমর্মিতা জানানো হচ্ছে। এলাকাবাসী আশা করছেন, পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন এই সড়কগুলিতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে এবং দ্রুতগতিতে যানবাহন চলাচল রোধ করবে।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “যুবকরা খুবই আত্মনির্ভরশীল এবং দায়িত্বশীল ছিল। কিন্তু তাদের জীবন হারানো সত্যিই দুঃখজনক। আশা করি ভবিষ্যতে সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে।”
পুলিশি ব্যবস্থা
ওসি হাফিজুর রহমান জানান, নিহতদের মরদেহ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে। পাশাপাশি দুর্ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল বিষয় তদন্ত করা হচ্ছে। স্থানীয় হাইওয়ে পুলিশ এবং ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা এলাকার যান চলাচলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়মিতভাবে তল্লাশি চালাচ্ছেন।
নিরাপত্তা ও সচেতনতার আহ্বান
বিশেষজ্ঞরা বলেন, মোটরসাইকেল চালনার সময় অতিরিক্ত গতি, হেলমেটের অভাব ও রাতের অন্ধকারে অসতর্কতা দুর্ঘটনার মূল কারণ। তারা যুবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, সর্বদা হেলমেট ব্যবহার করতে এবং সড়কে সতর্ক থাকতে।
এছাড়া, পরিবারের প্রতি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, ছোটবেলাকাল থেকে সন্তানদের সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতন করা প্রয়োজন। স্থানীয় প্রশাসনও নিয়মিতভাবে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাচ্ছে, যাতে সড়ক দুর্ঘটনা কমানো যায়।
সমাপ্তি
বগুড়ায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই যুবকের প্রাণহানি শুধু তাদের পরিবার নয়, পুরো এলাকার জন্য শোকের। এই ধরনের দুর্ঘটনা রোধে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশি তদারকির পাশাপাশি জনগণের সচেতনতা অপরিহার্য। দ্রুতগতিতে চলাচল ও নিরাপত্তা বিধি মেনে চলা ছাড়া সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব নয়।
এম আর এম – ১৫৫৯,Signalbd.com