নৌবাহিনীর বার্ষিক সমুদ্র মহড়া সমাপ্ত, বঙ্গোপসাগরে সফল মিসাইল উৎক্ষেপণ
বাংলাদেশ নৌবাহিনী তাদের বার্ষিক সমুদ্র মহড়া ‘এক্সারসাইজ সেফ গার্ড’ সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। এই মহড়ার অংশ হিসেবে বঙ্গোপসাগরে সফলভাবে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। বুধবার সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর প্রধানরা নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজে আরোহণ করে সমাপনী দিবসের মহড়া প্রত্যক্ষ করেন।
মহড়ার উদ্বোধন ও স্বাগত
মহড়ার শুরুতে তিন বাহিনীর প্রধানরা জাহাজে পৌঁছালে কমান্ডার বিএন ফ্লিট তাঁদের স্বাগত জানান। এ সময় নৌবাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল তাঁদের গার্ড অব অনার প্রদান করে। এই মহড়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার সুরক্ষা এবং সংকটকালে সংশ্লিষ্ট সামুদ্রিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করা হয়েছে।
মহড়ায় অংশগ্রহণকারী বাহিনী
মহড়ায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বিভিন্ন ধরনের জাহাজ অংশগ্রহণ করে, যার মধ্যে ছিল ফ্রিগেট, করভেট, ওপিভি, মাইন সুইপার, পেট্রোল ক্রাফট এবং মিসাইল বোট। এছাড়া, নৌবাহিনীর মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট ও হেলিকপ্টার এবং বিশেষায়িত ফোর্স সোয়াডসও অংশ নেয়। বাংলাদেশ সেনা, বিমানবাহিনী এবং কোস্ট গার্ডসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট মেরিটাইম সংস্থাগুলোও এই মহড়ায় অংশগ্রহণ করে।
মহড়ার কার্যক্রম
আইএসপিআর জানায়, নৌসদস্যদের পেশাগত উৎকর্ষ অর্জনের জন্য মহড়াটি তিনটি ধাপে অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল নৌবহরের বিভিন্ন কলাকৌশল অনুশীলন, সমুদ্র এলাকায় পর্যবেক্ষণ, অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান, লজিস্টিকস অপারেশন এবং উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত নৌ স্থাপনাগুলোর প্রতিরক্ষা মহড়া।
চূড়ান্ত দিনে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ, বিমানবিধ্বংসী গোলাবর্ষণ, সাবমেরিনবিধ্বংসী রকেট ডেপথ চার্জ নিক্ষেপ, ভিবিএসএস, নৌ কমান্ডো মহড়া এবং নৌযুদ্ধের বিভিন্ন কলাকৌশল অনুশীলন করা হয়।
মহড়ার সফল সমাপ্তি
মহড়ার সফল সমাপ্তির পর সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনী প্রধান চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের সব কর্মকর্তা ও নাবিকের উদ্দেশে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন। বক্তব্যে তাঁরা সফল মহড়ার জন্য নৌসদস্যদের অভিনন্দন জানান এবং নৌসদস্যদের দেশাত্মবোধ, পেশাগত মান, দক্ষতা ও কর্মনিষ্ঠার প্রশংসা করেন।
চূড়ান্ত পর্বে সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনী প্রধান উপস্থিত থেকে মহড়াকে আরও তাৎপর্যময় করে তোলায় নৌবাহিনী প্রধান তাঁদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
বাংলাদেশ নৌবাহিনীর এই বার্ষিক সমুদ্র মহড়া দেশের সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। মহড়ার মাধ্যমে নৌবাহিনীর সদস্যরা তাদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি করেছে এবং দেশের সমুদ্রসীমার সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
এটি দেশের সামরিক শক্তি ও সক্ষমতার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ, যা ভবিষ্যতে দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।