
বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ মানেই বাড়তি উত্তেজনা। তবে এশিয়া কাপের সুপার ফোরে বুধবার দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সেই উত্তেজনার ছিটেফোঁটাও দেখা গেল না। ১৬৯ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে জাকের আলীর দল অলআউট হলো মাত্র ১২৭ রানে। ফলে ৪১ রানের সহজ জয় নিয়ে ভারত নিশ্চিত করল ফাইনাল। অন্যদিকে বাংলাদেশকে এখন পাকিস্তানের বিপক্ষে “অঘোষিত সেমিফাইনাল”-এ নামতে হবে।
ভারতের ব্যাটিংয়ে অভিষেক শর্মার ঝলক
টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠান বাংলাদেশ অধিনায়ক জাকের আলী। প্রথম দুই ওভারে বল হাতে নিয়ন্ত্রণে থাকলেও দ্রুত ম্যাচের লাগাম ছেড়ে দেয় টাইগাররা। ভারতের ওপেনার অভিষেক শর্মা খেলেন ঝড়ো ইনিংস। মাত্র ৪৩ বলে ৭৫ রান করেন তিনি, যাতে ছিল ছক্কা ও চারের দারুণ সমন্বয়।
অন্যপ্রান্তে শুভমান গিল করেন ২৯ রান, আর হার্দিক পান্ডিয়ার ব্যাট থেকে আসে ২৯ বলে ৩৮ রানের ঝলক। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ভারতের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৬৮/৬। বাংলাদেশের হয়ে রিশাদ হোসেন নেন ২ উইকেট, আর তানজিম সাকিব, মোস্তাফিজ ও সাইফউদ্দিন পান ১টি করে উইকেট।
ব্যাটিংয়ে ভরাডুবি বাংলাদেশের
১৬৯ রানের লক্ষ্য খুব বড় কিছু ছিল না। কিন্তু ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই তানজিদ তামিম ফিরে গেলে শুরু হয় ধস। এরপর পারভেজ ইমন ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে আউট হন মাত্র ২১ রানে। নিয়মিত বিরতিতে হারতে থাকে উইকেট। তাওহীদ হৃদয় করেন মাত্র ৭ রান, শামিম হোসেন কোনো রানই করতে পারেননি।
অধিনায়ক জাকের আলীর রানআউট দলকে ফেলে দেয় বড় বিপদে। এর মাঝে একাই লড়াই করে যান সাইফ হাসান। তিনটি চার ও পাঁচটি ছয়ের সাহায্যে ৫১ বলে করেন ৬৯ রান। তবে সঙ্গীর অভাবে তার লড়াইও ব্যর্থ হয়। শেষ দিকে দ্রুত উইকেট হারিয়ে ১৯তম ওভারে অলআউট হয় বাংলাদেশ।
ভারতের বোলিংয়ের সামনে অসহায় টাইগাররা
ভারতের হয়ে সবচেয়ে সফল বোলার ছিলেন কুলদীপ যাদব। তিনি ৩ উইকেট তুলে নিয়ে ভেঙে দেন বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডার। জাসপ্রিত বুমরাহ ও বরুণ চক্রবর্তী পান ২টি করে উইকেট। এছাড়া অক্ষর প্যাটেল ও তিলক ভার্মা নেন ১টি করে উইকেট।
টাইগার ব্যাটাররা শুরুতে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করলেও ভারতীয় স্পিনারদের সামনে ধৈর্য হারিয়ে ফেলে। মধ্য ওভারে চাপ সামলাতে না পেরে একের পর এক শট খেলতে গিয়ে ফিরতে হয় ব্যাটারদের।
বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ
ক্রিকেট বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডার পরিকল্পনাহীন ছিল। শামিমকে আগে নামানো কিংবা অভিজ্ঞ ব্যাটারদের দায়িত্বজ্ঞানহীন শট ম্যাচকে হেলায় ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে। সাইফ হাসানের ইনিংস ছাড়া ইতিবাচক কিছু খুঁজে পাওয়া যায়নি।
একজন সাবেক ক্রিকেটার বলেন, “এই ম্যাচ প্রমাণ করেছে বাংলাদেশ এখনো চাপের ম্যাচে সঠিক পরিকল্পনা করে খেলতে পারে না। পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় পেতে হলে ব্যাটিং অর্ডারে বড় পরিবর্তন আনতে হবে।”
একটি জয়ই ফাইনালে তুলতে পারত বাংলাদেশকে, কিন্তু ব্যাটিং ব্যর্থতা সেই স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে। এখন পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচই নির্ধারণ করবে টাইগাররা আসন্ন ফাইনালে ভারতের সঙ্গে লড়ার সুযোগ পাবে কি না। তবে ভারতের বিপক্ষে ব্যর্থতা স্পষ্ট করেছে — কেবল এক-দুজনের লড়াইয়ে বড় দলের বিপক্ষে জয় পাওয়া সম্ভব নয়।
এম আর এম – ১৫১১,Signalbd.com