
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আগামী ১৮ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন (ইসি) হালনাগাদকৃত চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে। ইসি সচিবালয়ের পরিচালক (জনসংযোগ) মোঃ রুহুল আমিন মল্লিক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ৩১ অক্টোবর ২০০৭ তারিখ বা তার পূর্বে জন্মগ্রহণকারী নাগরিকদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। এই তালিকায় দাবি, আপত্তি ও সংশোধনের জন্য সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে।
খসড়া ভোটার তালিকা এবং সংশোধন প্রক্রিয়া
হালনাগাদকৃত খসড়া ভোটার তালিকার পিডিএফ প্রস্তুত ও মাঠ পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রেশন অফিসারের সিএমএস পোর্টালে লিংক প্রেরণের শেষ সময় ছিল ২৫ অক্টোবর।
মুদ্রিত তালিকা প্রকাশের জন্য নির্ধারিত তারিখ ১ নভেম্বর। দাবি, আপত্তি ও সংশোধনের জন্য আবেদন দাখিলের শেষ সময় ১৬ নভেম্বর। সংশোধনকারী কর্তৃপক্ষের আবেদন নিষ্পত্তির শেষ সময় ১৭ নভেম্বর।
এই প্রক্রিয়ার পরই ১৮ নভেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। ইসি নিশ্চিত করেছে, এই তালিকা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ব্যবহার হবে এবং কোনো ভোটারের অবৈধ বাদ দেওয়া বা অতিরিক্ত অন্তর্ভুক্তি প্রতিরোধ করা হবে।
নির্বাচনী প্রস্তুতি ও প্রভাব
চূড়ান্ত ভোটার তালিকার প্রকাশ নির্বাচন প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ ও নির্ভরযোগ্য করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নির্বাচনী পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, যথাসময়ে এবং সঠিকভাবে তালিকা প্রকাশ করা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তালিকা প্রকাশের সাথে সাথে ভোটাররা তাদের তথ্য যাচাই করতে পারবেন। যদি কোনো ভুল থাকে, তারা সময়মতো সংশোধনের আবেদন করতে পারবেন। এটি নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও অংশগ্রহণ বাড়াতে সহায়ক হবে।
দেশের ভোটার সংখ্যা ও পরিসংখ্যান
এর আগে ৩১ আগস্ট ২০২৫ সালে ইসি সম্পূরক চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করে। সেই সময় দেশের মোট ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ১২ কোটি ৬৩ লাখ ৭ হাজার ৫০৪ জনে। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪১ লাখ ৪৫৫ জন, নারী ভোটার ৬ কোটি ২২ লাখ ৫ হাজার ৮১৯ জন এবং হিজড়া ভোটার ১,২৩০ জন।
৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হবে, তাদের অন্তর্ভুক্ত করে নতুন চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রস্তুত করা হবে।
পূর্ববর্তী প্রক্রিয়া ও ইতিহাস
বাংলাদেশে প্রতি নির্বাচনের আগে ইসি খসড়া এবং চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করে থাকে। খসড়া তালিকা সাধারণত ভোটারদের দাবী, আপত্তি ও সংশোধন নিশ্চিত করার জন্য প্রকাশ করা হয়।
এর আগে ৩১ আগস্ট ২০২৫ সালের সম্পূরক চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের মাধ্যমে ইসি দেশের মোট ভোটার সংখ্যা হালনাগাদ করেছিল। এবারের চূড়ান্ত তালিকা নির্বাচনকে আরও প্রস্তুত, স্বচ্ছ ও নিরাপদ করার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞ মতামত
নির্বাচনী বিশ্লেষকরা মনে করছেন, চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের সময়সূচি নির্ধারণ করা ইসির প্রক্রিয়াকে আরও নির্ভরযোগ্য করে তোলে। তারা বলেন, ভোটার তালিকায় সঠিক তথ্য থাকা নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ায় এবং ভোটারদের আস্থা নিশ্চিত করে।
একজন বিশ্লেষক মন্তব্য করেন, “যখন ভোটাররা তাদের তথ্য যাচাই করতে পারবেন, তখন ভোটাধিকার সঠিকভাবে প্রয়োগ করা সম্ভব হবে। এটি দেশের গণতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
১৮ নভেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের মাধ্যমে দেশের ভোটাররা তাদের তথ্য যাচাই এবং সংশোধনের সুযোগ পাবেন। এটি আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতিকে শক্তিশালী করবে।
এবার দেখা যাবে, সংশোধনের আবেদন প্রক্রিয়া কতটা কার্যকর হবে এবং নির্বাচনী অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পাবে কি না।
এম আর এম – ১৪৭৩,Signalbd.com