যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে দাবি করেছেন, তিনি বিশ্বে সাতটি যুদ্ধ থামিয়েছেন এবং প্রতিটি যুদ্ধের জন্য তার নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়া উচিত। তিনি উল্লেখ করেছেন, তার প্রশাসনের সময় থামানো এসব যুদ্ধের মধ্যে রয়েছে ভারত–পাকিস্তান, থাইল্যান্ড–কম্বোডিয়া, আর্মেনিয়া–আজারবাইজান, কসোভো–সার্বিয়া, ইসরায়েল–ইরান, মিশর–ইথিওপিয়া এবং রুয়ান্ডা–কঙ্গো।
ঘটনার প্রেক্ষাপট
‘আমেরিকান কর্নারস্টোন ইনস্টিটিউট ফাউন্ডার্স ডিনার’-এ ট্রাম্প এই দাবি জানান। তিনি বলেন, “আমি বলেছিলাম—আপনারা যদি লড়াই না থামান, আমরা বাণিজ্য করব না। তাদের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র আছে। তারা থেমে গেল।”
বিশেষভাবে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের উদাহরণ দিয়ে ট্রাম্প জানান, তিনি বাণিজ্যচাপের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ থামিয়েছেন। একইভাবে, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যকার দ্বন্দ্বও তিনি একই কৌশলে থামিয়েছেন।
থামানো সাতটি যুদ্ধের বিবরণ
ট্রাম্পের দাবি অনুযায়ী, তার প্রশাসন যেসব সংঘাত থামিয়েছে তা হলো:
- ভারত–পাকিস্তান: বাণিজ্য ও কূটনৈতিক চাপের মাধ্যমে যুদ্ধ প্রতিরোধ
- থাইল্যান্ড–কম্বোডিয়া: আঞ্চলিক সংঘর্ষ বন্ধে মধ্যস্থতা
- আর্মেনিয়া–আজারবাইজান: সীমান্ত সংঘাত কমানো
- কসোভো–সার্বিয়া: রাজনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা হ্রাস
- ইসরায়েল–ইরান: কূটনৈতিক উদ্যোগ ও সমঝোতা প্রচেষ্টা
- মিশর–ইথিওপিয়া: জলসম্পদ ও সীমান্ত বিরোধ কমানো
- রুয়ান্ডা–কঙ্গো: সংঘাত প্রশমনের উদ্যোগ
তিনি উল্লেখ করেছেন, এই সাতটির মধ্যে ছয়টি সংঘাত বাণিজ্যচাপের মাধ্যমে থামানো সম্ভব হয়েছে।
রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ ও নোবেল পুরস্কারের দাবি
ট্রাম্প বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামানো তার জন্য চ্যালেঞ্জিং হয়েছে। তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তার সম্পর্কের কথাও উল্লেখ করেছেন। তবে তিনি আশ্বস্ত করেছেন যে, একদিন এই যুদ্ধও সমাধান হবে।
“আমি বলেছিলাম—আমি সাতটি যুদ্ধ থামিয়েছি। আপনি একটার কথা বলছেন, সেটাও বড় যুদ্ধ। তবে আমরা এটাও থামাব,” তিনি বলেন।
রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া
বিশ্ব রাজনীতিবিদ ও কূটনীতিবিদরা ট্রাম্পের দাবি নিয়ে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। কিছু বিশ্লেষক মনে করছেন, ট্রাম্পের ভাষণে কৌশলগত কূটনীতির গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। অন্যদিকে, কিছু সমালোচক বলেন, বাস্তবতা ও কূটনৈতিক ফলাফল নিয়ে বিতর্ক হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আন্তর্জাতিক শান্তি ও সংঘাত সমাধানের ক্ষেত্রে বাণিজ্য ও কূটনৈতিক চাপ কার্যকর হাতিয়ার হতে পারে। তবে নোবেল শান্তি পুরস্কারের দাবির সাথে বাস্তবতা কতটা মিলে তা এখনো বিতর্কের বিষয়।
অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব
যুদ্ধ থামানো দেশগুলোর জন্য অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা বাড়ায়। বাণিজ্যচাপের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠা হলে স্থানীয় অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত হতে পারে। ট্রাম্পের দাবি অনুযায়ী, এই উদ্যোগগুলো স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রা ও নিরাপত্তা উন্নত করতে সাহায্য করবে।
সামাজিক দিক থেকে, যুদ্ধ বন্ধ হলে মানসিক চাপ কমে, জনসংখ্যার নিরাপত্তা বৃদ্ধি পায় এবং শিশু ও পরিবারগুলো শান্তিপূর্ণ পরিবেশে জীবন যাপন করতে পারে।
বিশ্লেষণ ও মন্তব্য
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের এই দাবি আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে তার সক্রিয় ভূমিকা তুলে ধরে। যদিও অনেক ক্ষেত্রে সাফল্য নির্ধারণ করা কঠিন, তবে তার উদ্যোগগুলো কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
একজন বিশ্লেষক মন্তব্য করেছেন, “যুদ্ধ থামানোর ক্ষেত্রে কূটনীতি ও বাণিজ্যচাপের প্রভাব বিবেচনা করা দরকার। ট্রাম্পের পদক্ষেপগুলো কিছু ক্ষেত্রে ফলপ্রসূ হয়েছে, তবে নোবেল শান্তি পুরস্কার দাবি বিতর্কিত।”
ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি অনুযায়ী, তিনি সাতটি সংঘাত থামিয়েছেন এবং প্রতিটির জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কারের দাবি করেছেন। যদিও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিভিন্ন মত আছে, তার পদক্ষেপগুলো কৌশলগত এবং রাজনৈতিক আলোচনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক সংঘাত সমাধানে ট্রাম্পের নীতিমালা ও কৌশল নিয়ে আরও বিশ্লেষণ হবে।
এম আর এম – ১৪৫৬,Signalbd.com



