আঞ্চলিক

রাবিতে পোষ্য কোটা ইস্যুতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ধস্তাধস্তি

Advertisement

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা ইস্যুতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরুর পর প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার বিকেলে জুবেরী ভবনের বারান্দায় শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় কয়েকজন আহত হয়েছেন এবং ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

শিক্ষার্থীরা পোষ্য কোটা বহাল রাখার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছেন। সকাল থেকেই প্রশাসনিক ভবনের সামনে তারা সমাবেশ করে এবং কোটা বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিস্তারিত

সকালের দিকে ছাত্ররা প্রশাসনিক ভবনের সামনে জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা বিভিন্ন ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে কোটা প্রথার বিরোধিতা করেন। দুপুরের দিকে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন খান প্রশাসনিক ভবন থেকে বের হয়ে গাড়িতে উঠতে গেলে শিক্ষার্থীরা তাকে ঘিরে ধরে।

শিক্ষার্থীরা উপ-উপাচার্যের বাসভবনে প্রবেশে বাধা দেয় এবং বাসভবনের দরজা তালাবদ্ধ করে। উপ-উপাচার্য ও প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান নিরাপত্তা সহকারীদের সঙ্গে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করলেও শিক্ষার্থীরা বাধা প্রদান করেন।

জুবেরী ভবনের ধস্তাধস্তি

এরপর শিক্ষার্থীরা জুবেরী ভবনের দিকে আসার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের উপস্থিতি ঘটায় উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। এক পর্যায়ে একজন শিক্ষক ও ছাপাখানার কর্মকর্তা শিক্ষার্থীদের আটকানোর চেষ্টা করলে হাতাহাতি শুরু হয়।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন খান জুবেরী ভবনের দ্বিতীয় তলায় চলে গেলে শিক্ষার্থীরা তাকে সেখানে অবরুদ্ধ করে রাখেন। ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক কামাল উদ্দিন, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদসহ আরও কয়েকজন শিক্ষক পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন।

প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার মাধ্যমে উত্তেজনা কমানোর চেষ্টা করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘোষণা করেছে যে কোনো ধরনের সহিংসতা গ্রহণযোগ্য নয় এবং দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পোষ্য কোটা ইস্যুর প্রেক্ষাপট

পোষ্য কোটা দীর্ঘদিন ধরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিতর্কিত বিষয়। শিক্ষার্থীদের একটি অংশ কোটা বহাল রাখার পক্ষপাতী, আবার অন্যরা কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছেন। সম্প্রতি প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোটা বজায় রাখার সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের অসন্তোষের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, কোটা ইস্যু নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে।

শিক্ষার্থীদের প্রভাব এবং সামাজিক প্রতিক্রিয়া

ক্যাম্পাসে চলমান উত্তেজনা সামাজিক ও শিক্ষাব্যবস্থায়ও প্রভাব ফেলছে। শিক্ষার্থীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের অবস্থান জানাচ্ছেন এবং গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবি, কোটা ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হোক।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাব্যবস্থা ও প্রশাসন উভয়কেই সতর্ক থাকতে হবে যাতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে তারা সহিংসতা ছাড়া নিজেদের দাবি আদায় করতে চান।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা ইস্যুতে শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের মধ্যে সংঘর্ষ ক্যাম্পাসে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে কোটা বাতিলের দাবি জানাতে চাইছেন, তবে এই ধস্তাধস্তি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে। প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা জরুরি।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীরা মিলিতভাবে এই সংকট নিরসন করতে পারলে ক্যাম্পাসে শান্তি ফিরে আসবে এবং শিক্ষার্থীরা তাদের অধিকার নিয়ে নিরাপদে আন্দোলন চালাতে পারবে।

এম আর এম – ১৪৩০,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button