বাংলাদেশ

দেশব্যাপী লোডশেডিং হতে যাচ্ছে, থাকবে যতদিন

দেশের বেশ কয়েকটি বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আগামী কিছুদিন দেশব্যাপী লোডশেডিং কার্যকর হবে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) মঙ্গলবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। বিপিডিবি বলেছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ চলছে এবং আশা করা হচ্ছে, ২-৩ দিনের মধ্যে লোডশেডিং নিয়ন্ত্রণে আসবে।

লোডশেডিংয়ের কারণ

বিপিডিবির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশের প্রধান বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে যান্ত্রিক ত্রুটি ঘটায় হঠাৎ বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে গেছে। এর ফলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নির্ধারিত সময় অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে। বিশেষ করে ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী ও খুলনা অঞ্চলে লোডশেডিংয়ের তীব্র প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

বিপিডিবি জানিয়েছে, যান্ত্রিক ত্রুটি সমাধানের জন্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা প্রতিনিয়ত কাজ করছেন। পাশাপাশি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে জরুরি মেরামতির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

পূর্বের পরিস্থিতি ও প্রভাব

দেশে আগে ও এরকম পরিস্থিতি ঘটেছে, যখন বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রে হঠাৎ সমস্যা দেখা দিয়েছে। তখনও কয়েকদিন লোডশেডিংয়ের সময় বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদ্যুৎ বিভ্রাট সাধারণত শিল্প, ব্যবসা ও সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে বিশাল প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে শিল্পাঞ্চল, হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ, এবং ব্যাংকিং সেক্টরে এই লোডশেডিং প্রভাব ফেলছে।

বিদ্যুৎ কম থাকায় সাপ্লাই রাশ্ট্রিকশন, উৎপাদন ব্যাঘাত, এবং ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে বিলম্ব দেখা যায়। বিপিডিবি ইতিমধ্যেই দেশের নাগরিকদের ধৈর্যধারণ ও সহযোগিতা কামনা করেছে।

সরকারের পদক্ষেপ

বিপিডিবি জানিয়েছে, লোডশেডিং সাময়িক এবং এটি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে মেরামত কাজ চলছে। এছাড়া বিকল্প বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য কিছু অঞ্চলে জেনারেটরের ব্যবহারও করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, বিদ্যুৎ সরবরাহে এই ধরনের যান্ত্রিক ত্রুটি কমানোর জন্য সরকার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি ও লোডশেডিং কমানোর লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে।

নাগরিকদের প্রতিক্রিয়া

নাগরিকরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন। অনেকেই বলেছেন, হঠাৎ লোডশেডিংয়ের ফলে দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, উৎপাদন প্রক্রিয়া বন্ধ হওয়ায় ক্ষতি হচ্ছে। তবে বিপিডিবি তাদের ধৈর্য্য ও সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, লোডশেডিংয়ের ফলে অনলাইন ক্লাস ও পড়াশোনায় সমস্যা হচ্ছে। কিছু পরিবার বলেছে, দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ বন্ধ থাকায় রান্না ও অন্যান্য কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞ মতামত

বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এমন লোডশেডিং স্বাভাবিক। তবে এটি দ্রুত সমাধান করা প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, দেশের বিদ্যুৎ পরিকাঠামোতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা হলে ভবিষ্যতে এই ধরনের সমস্যার পুনরাবৃত্তি কমানো সম্ভব।

বিদ্যুৎ সরবরাহের স্থিতিশীলতা দেশের অর্থনীতি ও মানুষের দৈনন্দিন জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই নাগরিক ও ব্যবসায়ীদের ধৈর্য্য ধরে সহযোগিতা করা গুরুত্বপূর্ণ।

পরিশেষে

দেশব্যাপী লোডশেডিং সাময়িক হলেও আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশা করা হচ্ছে। বিপিডিবি ইতিমধ্যেই জরুরি মেরামত ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বৃদ্ধি করার পদক্ষেপ নিয়েছে। নাগরিকদের ধৈর্য্য ধরে সহযোগিতা করা উচিত। যদিও লোডশেডিং সমস্যা সাময়িক, তবে এটি দেশের বিদ্যুৎ পরিকাঠামোর উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা প্রতিফলিত করছে।

এম আর এম – ১২৬০,Signalbd.com

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button