বাংলাদেশ

কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দেশে ফিরবেন তারেক রহমান

Advertisement

 বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান খুব শিগগিরই দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এই তথ্য দেন। রাজনৈতিক অঙ্গনে এই ঘোষণাকে বড় ধরনের আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

তারেক রহমানের দেশে ফেরার ঘোষণা

ডা. জাহিদ হোসেন জাতীয় প্রেসক্লাবে পূবালী ব্যাংক কর্মচারী সংঘের সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। এ সময় তিনি বলেন, “কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তারেক রহমান দেশে ফিরবেন।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, দেশে গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করার নানা ষড়যন্ত্র চলছে এবং জনগণের অধিকার কেড়ে নেওয়ার অপচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

তারেক রহমান দেশে ফিরলে বিএনপির সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড আরও জোরদার হবে বলে দলের নেতাকর্মীদের বিশ্বাস। বিশেষ করে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে তার নেতৃত্ব দলের জন্য নতুন প্রেরণা তৈরি করবে।

রাজনৈতিক পটভূমি

তারেক রহমান ২০০৮ সাল থেকে লন্ডনে অবস্থান করছেন। দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে চিকিৎসার অজুহাতে বিদেশে গিয়ে আর দেশে ফেরেননি। এর আগে একাধিকবার তার দেশে ফেরার গুঞ্জন শোনা গেলেও কার্যত বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে এবারের ঘোষণাটি রাজনৈতিকভাবে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে।

বিএনপি নেতাদের দাবি, সরকারের দমন-পীড়ন এবং মামলার ভয়েই তারেক রহমান দীর্ঘদিন দেশে ফিরতে পারেননি। তবে এখন রাজনৈতিক পরিস্থিতি বদলাচ্ছে এবং জনগণ পরিবর্তনের জন্য অপেক্ষা করছে।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গুরুত্ব

ডা. জাহিদ তার বক্তব্যে বলেন, “ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সংবিধানকে পাশ কাটিয়ে কোনো বেআইনি পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।” তিনি স্পষ্ট করেন যে, তারেক রহমানের নেতৃত্বেই নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা হবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিএনপি আসন্ন নির্বাচনে তারেক রহমানকে সামনে রেখে জনগণকে একত্রিত করার কৌশল নিয়েছে। দলীয় নেতাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত শীর্ষ নেতৃত্বের প্রত্যাবর্তন কর্মীদের মাঠে সক্রিয় করবে।

সরকার ও বিরোধী দলের প্রতিক্রিয়া

বিএনপির পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া মিললেও সরকারপক্ষ বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলছেন, দেশে আইনের শাসন বিরাজ করছে এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অন্যদিকে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে নানা মত দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ মনে করেন, তারেক রহমান দেশে ফিরলে রাজনৈতিক ভারসাম্য ফিরে আসবে। আবার কেউ কেউ সন্দেহ করছেন, তার দেশে ফেরা সম্ভব হবে কিনা।

বিএনপি কর্মীদের প্রত্যাশা

দীর্ঘদিন ধরে মাঠে সক্রিয় কর্মীরা নেতার অনুপস্থিতিতে দিশাহারা হয়ে পড়েছিলেন। তারেক রহমান দেশে ফিরলে তারা নতুন উদ্যমে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করবেন বলে আশা প্রকাশ করছেন। স্থানীয় নেতারা বলছেন, “আমাদের নেতার উপস্থিতি মাঠ পর্যায়ে নতুন শক্তি যোগাবে।”

এছাড়া, বিএনপি সমর্থক সাধারণ জনগণের মধ্যেও এই ঘোষণা নতুন আশার সঞ্চার করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি ঘিরে ব্যাপক আলোচনা চলছে।

বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, তারেক রহমান দেশে ফিরতে পারলে বিএনপির জন্য তা হবে এক বড় সুযোগ। তবে আইনগত জটিলতা, মামলার সাজা এবং রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে ওঠা সহজ হবে না। তাদের মতে, বিষয়টি কেবল রাজনৈতিক ঘোষণা নয়; বাস্তবায়ন কঠিন।

তাদের আরও মন্তব্য, “যদি সত্যিই তারেক রহমান দেশে ফেরেন, তবে এটি বাংলাদেশের রাজনীতিতে বড় পরিবর্তনের সূচনা করবে। তবে সরকার কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়, সেটিই হবে দেখার বিষয়।”

সারসংক্ষেপ  

তারেক রহমানের দেশে ফেরার ঘোষণা বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস ছড়ালেও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—এবারও কি এটি কেবল রাজনৈতিক বক্তব্য, নাকি সত্যিই বাস্তবায়িত হবে? আগামী কয়েক সপ্তাহই বলে দেবে বিএনপি নতুন নেতৃত্ব পায় কি না এবং আসন্ন নির্বাচনে তার প্রভাব কতটা কার্যকর হয়।

এম আর এম – ১২০২, Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button