
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক শেষ হওয়ার পর তার উপস্থিতির প্রতিটি চিহ্ন মুছে ফেলতে ব্যস্ত হয়েছেন। বৈঠকের সঙ্গে সম্পর্কিত ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, কিমের উপস্থিতি যেসব জিনিসপত্রে লেগেছিল, তা সাবধানে পরিষ্কার করা হচ্ছে। এই ঘটনা আন্তর্জাতিক মিডিয়ার নজর কেড়েছে এবং আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে।
কিম-পুতিন বৈঠকের পর পরিস্থিতি
বেইজিংয়ে চীনের বিজয় দিবসের সামরিক কুচকাওয়াজে যোগ দেওয়ার পর কিম জং উন রাশিয়ায় পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠক শেষে টেলিগ্রামে প্রকাশিত ফুটেজে দেখা যায়, কিমের দুটি সহযোগী দ্রুত কাজ শুরু করেন। একজন কর্মী কিমের চেয়ারের হাতল ও পৃষ্ঠ সাবধানে মুছে ফেলছেন, অন্যজন গ্লাস, কুশন এবং অন্যান্য আসবাবপত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। এটি একটি প্রায় ফরেনসিক পদ্ধতির মতো মনে হয়েছে, যা বিশেষজ্ঞদের কৌতূহল বাড়িয়েছে।
উত্তর কোরিয়ার নিরাপত্তা প্রটোকল
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কিমের এই সতর্কতা মূলত নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তার ওপর ভিত্তি করে। উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে সংবেদনশীল তথ্য এবং জীবন্ত ডিএনএ-এর সম্ভাব্য সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য এ ধরনের সতর্কতা নেওয়া হয়। পুতিনের মতো শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মুখোমুখি হবার সময় উত্তর কোরিয়ার নেতার এই ব্যবস্থা একটি প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতা ও প্রটোকল
কিম জং উন বিদেশ সফরে খুব কম যান এবং সাধারণত বিমান ব্যবহার করেন না। চীনের সামরিক কুচকাওয়াজে তিনি বিশেষ ট্রেনে যাত্রা করেছিলেন। এর আগেও কিমের বিদেশ সফরের সময় স্পর্শকৃত জিনিসপত্র পরিষ্কার করা হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। এটি কেবল নিরাপত্তা নয়, বরং কূটনৈতিক প্রোটোকলের অংশও।
বৈঠকের প্রভাব ও কূটনৈতিক ব্যাখ্যা
কিম ও পুতিনের বৈঠক আনুষ্ঠানিকভাবে ইতিবাচকভাবে শেষ হয়েছে। উভয় নেতা সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তাদের নিজ নিজ দেশে ফিরে যাওয়া হয়েছে। তবে কিমের উপস্থিতির চিহ্ন মুছে ফেলার এই দৃশ্য আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, এটি কেবল নিরাপত্তার প্রটোকল নয়, বরং চীনের নজরদারি এড়ানোর একটি কৌশলও হতে পারে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
রাশিয়ান সাংবাদিক আলেকজান্ডার ইউনাশেভ তার চ্যানেল “ইউনাশেভ লাইভ”-এ উল্লেখ করেছেন, বৈঠকের পর কিমের উপস্থিতির প্রতিটি চিহ্ন সাবধানে মুছে ফেলা হয়েছে। বিভিন্ন বিশ্লেষক মনে করছেন, এটি একটি চরম সতর্কতার উদাহরণ, যা বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রনেতাদের জন্যও নজরকাড়া।
বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিমের এই সতর্কতা রাজনৈতিক, কূটনৈতিক এবং নিরাপত্তা সব দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ। বিদেশ সফরের সময় এমন পদক্ষেপ নেওয়া নেতার গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অপরিহার্য। এটি আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মানদণ্ডের চেয়ে বেশি নজরকাড়া এবং দৃষ্টিনন্দন।
সংক্ষিপ্তসার
কিম জং উনের পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর সম্পূর্ণ ফরেনসিক স্টাইলে স্পর্শকৃত জিনিসপত্র মুছে ফেলার দৃশ্য আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ও বিশ্লেষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এটি প্রমাণ করে, উচ্চ পর্যায়ের কূটনৈতিক বৈঠকে নিরাপত্তা ও গোপনীয়তার প্রতি কতটা গুরুত্ব দেওয়া হয়। এ ঘটনা কেবল কিমের ব্যক্তিগত সতর্কতা নয়, বরং আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক প্রোটোকলের একটি নজরকাড়া উদাহরণ।
এম আর এম – ১১৭০, Signalbd.com