প্রযুক্তি

চাঁদে অক্সিজেন উৎপাদন: ভবিষ্যতের মহাকাশ অভিযানের নতুন দিগন্ত

Advertisement

মানুষের চাঁদে বসতি স্থাপনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে এক নতুন অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। চাঁদের মাটি থেকে অক্সিজেন উৎপাদনের প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা চলছে, যা ভবিষ্যতে মহাকাশ অভিযানের খরচ কমাতে এবং চাঁদে দীর্ঘমেয়াদি বসবাসের সম্ভাবনাকে জোরদার করবে।

চাঁদের মাটিতে অক্সিজেনের উপস্থিতি

চাঁদের পৃষ্ঠে যে ধুলোময় মাটি রয়েছে, যা রেগোলিথ নামে পরিচিত, তা মূলত অক্সিজেন, সিলিকন, ম্যাগনেসিয়াম, লোহা, ক্যালসিয়াম ও অ্যালুমিনিয়ামসহ বিভিন্ন ধাতব অক্সাইডে সমৃদ্ধ। এই রেগোলিথ থেকে অক্সিজেন আলাদা করা গেলে, তা নভোচারীদের শ্বাস-প্রশ্বাস এবং রকেটের জ্বালানি তৈরির জন্য ব্যবহার করা সম্ভব হবে।

সিয়েরা স্পেসের উদ্যোগ

বেসরকারি মহাকাশ সংস্থা সিয়েরা স্পেস এই বিষয়ে উল্লেখযোগ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছে। তারা একটি বিশেষ যন্ত্র তৈরি করেছে, যা চাঁদের মতো তাপমাত্রা ও চাপে রেগোলিথ গলিয়ে অক্সিজেন উৎপাদন করতে সক্ষম। এই প্রক্রিয়ায় রেগোলিথকে ১,৬৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় গলিয়ে, রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে অক্সিজেন আলাদা করা হয়।

নাসার সহযোগিতা

সিয়েরা স্পেসের এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা নাসার জনসন স্পেস সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভবিষ্যতে চাঁদে একটি স্থায়ী ঘাঁটি স্থাপনের লক্ষ্যে, নাসা ও অন্যান্য মহাকাশ সংস্থাগুলো এই ধরনের প্রযুক্তি উন্নয়নে কাজ করছে।

অক্সিজেন উৎপাদনের গুরুত্ব

চাঁদে অক্সিজেন উৎপাদন: ভবিষ্যতের মহাকাশ অভিযানের নতুন দিগন্ত

চাঁদে অক্সিজেন উৎপাদন করতে পারলে, পৃথিবী থেকে অক্সিজেন ও জ্বালানি বহন করার প্রয়োজনীয়তা কমবে, যা মহাকাশ অভিযানের খরচ কমাবে। এছাড়া, চাঁদের মাটি থেকে ধাতু আহরণ করে সেগুলো বিভিন্ন নির্মাণকাজে ব্যবহার করা যেতে পারে।

ভবিষ্যতের পরিকল্পনা

সিয়েরা স্পেসের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৮ সালের মধ্যে চাঁদে তাদের যন্ত্রের কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হবে। তবে, চাঁদের কম মাধ্যাকর্ষণ শক্তি ও অন্যান্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এই প্রযুক্তি কার্যকর করা একটি জটিল প্রক্রিয়া।

চাঁদে অক্সিজেন উৎপাদনের এই প্রচেষ্টা মহাকাশ গবেষণায় একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। সফল হলে, এটি চাঁদে মানুষের স্থায়ী বসবাস ও অন্যান্য গ্রহে অভিযানের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হবে।

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button