বিশ্ব

ফিলিস্তিনিদের জাতিসংঘে যোগদানে যুক্তরাষ্ট্রের বাধা: কারণ ও প্রভাব

আগামী সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসসহ ৮০ জন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তার যোগদান ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা বাতিল করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এই পদক্ষেপকে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের শান্তি প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করার ফলস্বরূপ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তবে, জাতিসংঘ সদর দপ্তর চুক্তি অনুযায়ী, বিদেশি কর্মকর্তাদের নিউইয়র্কে উপস্থিতি রোধ করা যাবে না, যা যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপের পটভূমি:

যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ ফিলিস্তিনিদের জাতিসংঘে অংশগ্রহণের অধিকারকে সীমাবদ্ধ করছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা শান্তি প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করছেন এবং একতরফা ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতির চেষ্টা করছেন। তবে, জাতিসংঘ সদর দপ্তর চুক্তি অনুযায়ী, বিদেশি কর্মকর্তাদের নিউইয়র্কে উপস্থিতি রোধ করা যাবে না, যা যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত করছে।

ফিলিস্তিনের প্রতিক্রিয়া:

ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এই সিদ্ধান্তে হতবাক হয়েছে এবং এটিকে ‘আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘ সদর দপ্তর চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেছে। তারা এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া:

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিওন সা’র মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া:

জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টেফানি দুজারিচ বলেছেন, জাতিসংঘ মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করবে এবং আশা করছে এই সমস্যার সমাধান হবে। তিনি বলেন, ‘সব সদস্য রাষ্ট্র এবং স্থায়ী পর্যবেক্ষকদের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ থাকা গুরুত্বপূর্ণ।’

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি:

বর্তমানে জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ১৪৭টি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে কোনো স্বীকৃত সীমানা না থাকা এবং ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের পশ্চিম তীরের বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করার কারণে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিলেও বাস্তব পরিস্থিতিতে খুব বেশি পরিবর্তন আসছে না।

ফ্রান্সের উদ্যোগ:

ফ্রান্স একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ফ্রান্স এবং সৌদি আরব যৌথভাবে একটি সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনা করেছে, যেখানে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি নিয়ে আলোচনা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান:

যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা শান্তি প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করছেন এবং একতরফা ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতির চেষ্টা করছেন।

আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন:

জাতিসংঘ সদর দপ্তর চুক্তি অনুযায়ী, বিদেশি কর্মকর্তাদের নিউইয়র্কে উপস্থিতি রোধ করা যাবে না। যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি:

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি এবং শান্তি প্রচেষ্টার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন এবং সহযোগিতার উপর। যদি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি বৃদ্ধি পায়, তাহলে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের পশ্চিম তীরের নিয়ন্ত্রণ কমতে পারে এবং ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে।

যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ ফিলিস্তিনিদের জাতিসংঘে অংশগ্রহণের অধিকারকে সীমাবদ্ধ করছে এবং আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি এবং শান্তি প্রচেষ্টার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন এবং সহযোগিতার উপর। যদি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে।

MAH – 12544 ,  Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Advertisement
Back to top button