
কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদির গ্রেফতারের পর তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগের মধ্যে অন্যতম স্বপন আহমেদের বক্তব্য, তিনি আফ্রিদির বিরুদ্ধে মামলা করার কথা ভাবছেন এবং এজন্য ভালো একজন উকিল খুঁজছেন। আদালতে এই মামলার শুনানি চলমান এবং আফ্রিদি বর্তমানে রিমান্ডে আছেন।
স্বপন আহমেদের মন্তব্য
সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে স্বপন আহমেদ তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে জানান, তিনি মামলা করার পরিকল্পনা করছেন। তিনি লেখেন, “আমি মামলা করার কথা ভাবছি। ভালো একজন উকিল প্রয়োজন। এরা আমার জীবন থেকে এক বছর কেড়ে নিয়েছে। আমার কান্নায় এদের মন গলেনি তখন।” স্বপনের এ মন্তব্য থেকে বোঝা যায়, তিনি আফ্রিদির কার্যকলাপের কারণে ব্যক্তিগত ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন এবং ন্যায়ের পথে এগোতে চান।
মামলার প্রেক্ষাপট
রোববার (২৪ আগস্ট) রাতে বরিশাল মহানগরের বাংলাবাজার এলাকায় সিআইডির বিশেষ অভিযানে তৌহিদ আফ্রিদিকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর রাতেই তাকে ঢাকায় আনা হয়। আদালতে সিআইডি তার ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে, যার প্রেক্ষিতে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
যাত্রাবাড়ী হত্যাকাণ্ডের পটভূমি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় যাত্রাবাড়ী থানায় শিক্ষার্থী আসাদুল হক বাবুর হত্যা মামলায় তৌহিদ আফ্রিদি প্রধান আসামি হিসেবে যুক্ত হন। এই মামলায় মোট ২৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাত আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আফ্রিদি মামলায় ১১ নম্বর আসামি। মামলায় উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিরা হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং পুলিশের সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন। এছাড়া আফ্রিদির বাবা নাসির উদ্দিন সাথীকে গত ১৭ আগস্ট গ্রেফতার করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের অবস্থান
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী দাবি করেন, তৌহিদ আফ্রিদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি হাউন আঙ্কেলের সঙ্গে মিলে ছাত্র আন্দোলনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন। রাষ্ট্রপক্ষের মতে, আফ্রিদির কর্মকাণ্ডে দেশের অভ্যন্তরে সন্ত্রাস সৃষ্টির চেষ্টা হয়েছিল।
আসামি পক্ষের দাবি
আফ্রিদির পক্ষের আইনজীবী উল্লেখ করেন, তার ক্লায়েন্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এবং শারীরিক অসুস্থতার কারণে রিমান্ডে থাকা উচিত নয়। আফ্রিদির অসুস্থতার প্রমাণ হিসেবে আদালতে বিভিন্ন চিকিৎসা নথি জমা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আসামি পক্ষের দাবি, আদালতে মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে চালানো হচ্ছে।
প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া
স্বপন আহমেদের হুঁশিয়ারি ও মামলা করার পরিকল্পনা প্রকাশ্যে আসার পর বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কিছু কনটেন্ট ক্রিয়েটর আফ্রিদির কার্যকলাপকে নিন্দা জানিয়েছেন, অন্যরা ঘটনা পর্যবেক্ষণ করছেন। মামলার প্রভাব পড়বে মিডিয়া জগতের নীতি ও আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে।
বিশ্লেষণ
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, মামলা ও রিমান্ডের প্রক্রিয়ায় আদালত আসামির স্বাস্থ্য, রাজনৈতিক প্রভাব এবং দায়ের করা অভিযোগগুলো বিবেচনা করবে। স্বপন আহমেদের মামলা কার্যকর হলে, আফ্রিদির ওপর আইনি চাপ আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। একই সঙ্গে এটি সোশ্যাল মিডিয়ায় কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য সতর্কবার্তা হিসেবেও বিবেচিত হবে।
তৌহিদ আফ্রিদির গ্রেফতার ও মামলার জটিলতায় স্বপন আহমেদের হুঁশিয়ারি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আইনের আওতায় এই মামলা কিভাবে অগ্রসর হবে, তা আগামী দিনে জানা যাবে।
এম আর এম – ১০৪২, Signalbd.com