ভারতে বাংলাদেশি নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা!
পুলিশের ধারণা, ওই নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে
পুলিশের ধারণা, ওই নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে
ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরুতে ২৮ বছর বয়সী এক বাংলাদেশি নারীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, বেঙ্গালুরুর রামামূর্তি এলাকার কালকেরে হ্রদের কাছ থেকে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ধর্ষণের পর তাকে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত নারীর পরিচয় ও পেশা
নিহত নারী তার স্বামী ও তিন সন্তান নিয়ে উত্তর বেঙ্গালুরুতে বসবাস করতেন। তার স্বামী বিবিএমপি গার্বেজ পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। ওই নারী একটি অ্যাপার্টমেন্টে গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন। বৃহস্পতিবার কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে এই ঘটনা ঘটে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পুলিশের তদন্ত ও মন্তব্য
কর্নাটকের একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, নিহত নারী বাংলাদেশি নাগরিক এবং তিনি ছয় বছর ধরে বেঙ্গালুরুতে বসবাস করছিলেন। তার কোনো বৈধ কাগজপত্র ছিল না, তবে তার স্বামীর বৈধ পাসপোর্ট রয়েছে এবং তিনি মেডিকেল ভিসায় ভারতে প্রবেশ করেছিলেন। ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, “ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারী স্বেচ্ছায় কোনো নির্জন জায়গায় গিয়েছিলেন পরিচিত কারো সঙ্গে দেখা করার জন্য। শুক্রবার সকালে তার মরদেহ পাওয়া যায়। তার মাথায় গুরুতর জখমের চিহ্ন ছিল।”
বিক্ষোভের আহ্বান
এ ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ ও সমাবেশের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। শনিবার, ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, বিকেল ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সংগঠনটির নেতারা ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আহ্বান জানিয়েছেন।
এই নৃশংস ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দ্রুত বিচার দাবি করেছেন। এছাড়া, বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশ সরকারের প্রতিক্রিয়া
বাংলাদেশ সরকার এ ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমরা ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দ্রুত বিচারের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।”
ভারতীয় কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া
ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে, তারা ঘটনার তদন্ত জোরদার করেছে এবং দোষীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। পুলিশের এক মুখপাত্র বলেন, “এটি একটি নৃশংস ঘটনা। আমরা অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
সতর্কতা ও নিরাপত্তা
এ ধরনের ঘটনা এড়াতে উভয় দেশের নাগরিকদের সতর্কতা অবলম্বন এবং অপরিচিত ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগে সাবধানতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, বৈধ কাগজপত্র ও ভিসা নিয়ে বিদেশে অবস্থান করার গুরুত্বও পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশি নারীর এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড দুই দেশের মধ্যে মানবাধিকার ও নিরাপত্তা বিষয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু করেছে। দোষীদের দ্রুত বিচার ও ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য উভয় দেশের সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে।
ভারতে বাংলাদেশি নারীকে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ