আঞ্চলিক

সাদাপাথর ফেরত দিতে ৩ দিনের আল্টিমেটাম

Advertisement

সিলেটের ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর খনি থেকে লুট হওয়া পাথর আগামী মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যার মধ্যে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। নির্ধারিত সময়ের পর কারও কাছে এসব পাথর পাওয়া গেলে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারোয়ার আলম।

প্রশাসনের নির্দেশনা

শনিবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকের পর জেলা প্রশাসক জানান, কোম্পানীগঞ্জ ও সিলেট সদর উপজেলায় এখনও অনেকের কাছে লুকিয়ে রাখা সাদাপাথর রয়েছে। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই যাদের কাছে এসব পাথর রয়েছে, তাদের নিজ উদ্যোগে ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর খনিতে ফিরিয়ে দিতে হবে।

জেলা প্রশাসক আরও জানান, এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই মাইকিং করে মানুষকে অবহিত করা হয়েছে। নির্দেশনা না মানলে অভিযানের মাধ্যমে পাথর উদ্ধার করা হবে এবং সেই এলাকায় দায়িত্বে থাকা জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাথর লুট

ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর এলাকা দীর্ঘদিন ধরেই অবৈধ উত্তোলন ও লুটের কারণে আলোচনায়। খনিজ সম্পদ রক্ষায় প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ নিলেও কিছু অসাধু চক্র সুযোগ নিয়ে পাথর লুট করেছে।

স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি খনি এলাকায় হঠাৎ করে ভাঙচুর ও লুটের ঘটনা ঘটে। এতে প্রচুর পরিমাণ সাদাপাথর খনির বাইরে চলে যায়। এসব পাথর এখন বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে রাখা হয়েছে, যা উদ্ধার করতেই জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগ।

জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা

সভায় জেলা প্রশাসক স্পষ্ট করে দেন, জনপ্রতিনিধিরা সরকারের অংশ হিসেবে এ দায়িত্ব এড়াতে পারবেন না। তাদের প্রতিটি এলাকায় খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত করতে হবে যাতে পাথর ফেরত দেওয়া হয়। সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

আইনি ব্যবস্থা ও শাস্তির হুঁশিয়ারি

প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী, আগামী ২৬ আগস্ট সন্ধ্যার পর অভিযান শুরু হবে। যদি কারও কাছে সাদাপাথর পাওয়া যায়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। একই সঙ্গে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরও দায়ী করা হবে।

জেলা প্রশাসক সারোয়ার আলম বলেন, “এখন থেকে যারা পাথর লুট করেছে কিংবা লুকিয়ে রেখেছে, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। পাশাপাশি এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মূলহোতাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।”

স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া

স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা প্রশাসনের এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা মনে করেন, দীর্ঘদিন ধরে ভোলাগঞ্জ খনির সাদাপাথর অবৈধভাবে চলে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল সরকার। প্রশাসনের কড়া অবস্থান এ ধরনের অপরাধ রোধে কার্যকর হবে।

তবে অনেকেই বলছেন, শুধু তিন দিনের আল্টিমেটাম যথেষ্ট নয়। ভবিষ্যতে নিয়মিত নজরদারি, সিসিটিভি স্থাপন ও টহল বাড়ানো জরুরি। নাহলে ফের একই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে।

বিশেষজ্ঞ মতামত

খনিজ সম্পদ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ভোলাগঞ্জ খনি দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। এ ধরনের লুটপাট জাতীয় সম্পদের ক্ষতি করে এবং স্থানীয় অর্থনীতির জন্যও হুমকি তৈরি করে।

তাদের মতে, প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণকেও সচেতন হতে হবে। সবাই মিলে অবৈধ কার্যকলাপের বিরুদ্ধে দাঁড়ালেই সাদাপাথরের মতো সম্পদ রক্ষা সম্ভব।

সংক্ষিপ্তসার

সিলেটের ভোলাগঞ্জে সাদাপাথর লুটের ঘটনায় প্রশাসনের দেওয়া তিন দিনের আল্টিমেটাম এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। সময়মতো পাথর ফেরত দেওয়া না হলে যে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা পরিষ্কার করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এখন দেখার বিষয়, সংশ্লিষ্টরা সময়ের মধ্যে পাথর ফিরিয়ে দেয় নাকি আইনের মুখোমুখি হয়।

এম আর এম – ১০০৭, Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button