বিশ্ব

বিজেপিকে ‘ফ্যাসিবাদী’ বলে যুদ্ধ ঘোষণা থালাপতি বিজয়ের

Advertisement

ভারতের দক্ষিণী সুপারস্টার থালাপতি বিজয় সম্প্রতি রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে নিজের দল ‘তামিলাগা ভেত্রি কাজগম’ গঠন করেছেন। মাদুরাইয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় তিনি সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপিকে ‘ফ্যাসিবাদী’ আখ্যা দিয়ে ঘোষণা করেন, এই লড়াই শুধু রাজনৈতিক নয়, বরং আদর্শের যুদ্ধ। তার বক্তব্যের কেন্দ্রবিন্দু ছিল ধর্মনিরপেক্ষতা, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং গণতন্ত্রের গুরুত্ব।

বিজয়ের ঘোষণার বিস্তারিত

মাদুরাইয়ের সভায় বিজয় বলেন, বিজেপি একদিকে ধর্মকে বিভাজনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে, অন্যদিকে গণতন্ত্র এবং স্বচ্ছতার মূল নীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। তাই বর্তমান সময়ে বিজেপি তার কাছে সবচেয়ে বড় আদর্শগত শত্রু। তিনি স্পষ্ট করেন, ডিএমকের সঙ্গে তার লড়াই শুধুমাত্র রাজনৈতিক মাঠে সীমাবদ্ধ, তবে বিজেপির সঙ্গে সংঘাত আদর্শিক স্তরে।

বিজয়ের দল ২০২৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই তামিলনাড়ুর রাজনীতিতে দ্রুত সমর্থন পেয়েছে। কোটি কোটি তরুণের মধ্যে তার প্রভাব বেড়ে গেছে। সভায় উপস্থিত ভক্ত-সমর্থকরা করতালি ও উল্লাসে তার বক্তৃতাকে স্বাগত জানান, যা বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য বিজয়কে অনুপ্রাণিত করছে।

দলের নীতি ও উদ্দেশ্য

তামিলাগা ভেত্রি কাজগমের মূল নীতি হল সমাজে সমতা, মুক্তচিন্তা, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার। বিজয় জানান, এই নীতিগুলো বিজেপির রাজনীতির সম্পূর্ণ বিপরীত। তার বক্তব্যে তিনি জোর দিয়েছেন যে, এই আদর্শের জন্য লড়াই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, “আমরা নীরব দর্শক হয়ে থাকতে পারি না। ফ্যাসিবাদী বিজেপির বিরুদ্ধে এখনই রুখে দাঁড়াতে হবে।” তার এই দৃঢ় ঘোষণার মাধ্যমে তিনি নতুন রাজনৈতিক যুদ্ধের সূচনা করেছেন, যা শুধু তামিলনাড়ুতে নয়, সমগ্র ভারতের রাজনীতিতেও প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।

রাজনৈতিক প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া

বিজয়ের বক্তব্য দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমস এবং ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম উল্লেখ করেছে, তার এই বক্তব্য জাতীয় রাজনীতিতে আলোড়ন সৃষ্টি করবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, একজন সুপারস্টারের এই ধরনের মন্তব্য রাজনৈতিক উত্তাপ এবং জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

যদিও বিজেপি বা অন্য প্রধান দলগুলো থেকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া আসেনি, রাজনৈতিক মহল ইতিমধ্যেই বুঝতে পেরেছে যে, এই বক্তব্য দক্ষিণ ভারতের সীমা অতিক্রম করে দেশের রাজনীতিতে বিতর্ক সৃষ্টি করতে পারে।

থালাপতি বিজয় অভিনেতা হিসেবে বহু বছর ধরে জনপ্রিয় ছিলেন। এক বছর আগেই তিনি রাজনীতিতে প্রবেশ করেছেন এবং নিজের দল প্রতিষ্ঠা করেছেন। তার রাজনৈতিক যাত্রার শুরু থেকেই ধর্মনিরপেক্ষতা ও আদর্শের উপর জোর দেওয়াকে মূল ভিত্তি হিসেবে নেওয়া হয়েছে। এর আগে দক্ষিণ ভারতের অন্যান্য সুপারস্টার-রাজনীতিবিদরা প্রায়শই নির্বাচনী রাজনীতিতে সীমাবদ্ধ থেকেছেন, কিন্তু বিজয়ের ঘোষণাগুলো আদর্শগত ও সামাজিক প্রভাবের কারণে ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে।

সমর্থক ও জনমতের প্রতিক্রিয়া

সভায় উপস্থিত সমর্থকরা তার বক্তৃতাকে উদ্দীপনামূলক এবং শক্তিশালী মনে করেছেন। ভক্তরা জানিয়েছেন, বিজয়ের প্রতিটি বাক্য যেন এক নতুন রাজনৈতিক আন্দোলনের সঙ্কেত। জনমতের বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বক্তব্য নির্বাচকদের মনোভাব এবং রাজনৈতিক গেমপ্ল্যানেও প্রভাব ফেলতে পারে।

বিশেষজ্ঞ মতামত

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, একজন তারকা-রাজনীতিকের মুখে ‘ফ্যাসিবাদী বিজেপি’ শব্দটি শুধু শিরোনামই নয়, বিতর্ককেও উস্কে দেবে। এটি দলের আদর্শগত অবস্থানকে সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে এবং নির্বাচনী রাজনীতিতে নতুন উত্তাপের সৃষ্টি করবে।

সংক্ষিপ্তসার

থালাপতি বিজয়ের ঘোষণা শুধু এক বক্তৃতা নয়, বরং ভারতের রাজনীতিতে আদর্শ ও মূল্যবোধের লড়াইয়ের সূচনা। ধর্মনিরপেক্ষতা, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং গণতন্ত্রকে কেন্দ্র করে তার বার্তা দক্ষিণ ভারতের সীমা অতিক্রম করে সমগ্র দেশে রাজনৈতিক আলোড়ন সৃষ্টি করবে। এখন প্রশ্ন হলো, ভবিষ্যতে ভারতের রাজনীতিতে এই আদর্শগত সংঘাত কীভাবে প্রতিফলিত হবে এবং বিজেপি-সহ অন্যান্য দল কিভাবে প্রতিক্রিয়া দেবে।

এম আর এম – ১০০২, Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button