বাংলাদেশ

ইউটিউব চ্যানেল খুললো ইসি, এআই নিয়ে সতর্ক করলেন সিইসি

Advertisement

নির্বাচন কমিশন (ইসি) সম্প্রতি তাদের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল চালু করেছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন উদ্বোধনী ভাষণে জানান, এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ভোটার, প্রার্থী এবং সাধারণ মানুষ সহজে নির্বাচন সংক্রান্ত সব তথ্য পাবে। এছাড়া তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে ছড়ানো মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্যের বিরুদ্ধে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।

নির্বাচনী তথ্য নাগরিকদের কাছে পৌঁছানোর নতুন প্ল্যাটফর্ম

নির্বাচন কমিশন দেশের ভোটারদের কাছে নির্ভরযোগ্য তথ্য সহজ ও সুন্দরভাবে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ইউটিউব চ্যানেল চালু করেছে। চ্যানেলে থাকবে ভোটার রেজিস্ট্রেশন, নির্বাচনী সময়সূচি, প্রার্থীদের করণীয়, ভোটার অধিকার ও দায়িত্ব এবং নির্বাচন-সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা।

সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সমাজের সব স্তরের মানুষকে মূলধারার সঙ্গে যুক্ত করা। নারী, যুব সম্প্রদায়, প্রতিবন্ধী ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীও যাতে সচেতনভাবে ভোটে অংশগ্রহণ করতে পারে, তা নিশ্চিত করাই আমাদের কাজ।”

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও অপতথ্য: বর্তমান চ্যালেঞ্জ

সিইসি বিশেষভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহারকে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, “আজকের দিনে সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা ভিডিও, বানোয়াট তথ্য এবং অপতথ্য দ্রুত ছড়াচ্ছে। কোনো তথ্য বিশ্বাস করার আগে যাচাই করুন এবং সত্যতা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না।”

তিনি আরও বলেন, “নাগরিকদের উচিত তথ্য গ্রহণের আগে নির্ভরযোগ্য সূত্র যাচাই করা। একে একটি সামাজিক দায়িত্ব হিসেবে নেওয়া উচিত।”

সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করার পদক্ষেপ

নির্বাচন কমিশন বিশ্বাস করে, গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ নির্বাচন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হলে তথ্য সবার কাছে পৌঁছানো অত্যন্ত জরুরি। সিইসি বলেন, “আমরা আমাদের সব তথ্য গ্রহণযোগ্যভাবে উপস্থাপন করব, যাতে মানুষের আস্থা বৃদ্ধি পায় এবং নির্বাচন ব্যবস্থার স্বচ্ছতা আরও দৃঢ় হয়।”

তিনি সকল ভোটার এবং প্রার্থীদের আহ্বান জানিয়েছেন, ইসির সঙ্গে সমন্বয় করে সঠিক তথ্য জনগণের কাছে পৌঁছাতে। এতে প্রতিটি ভোটের গুরুত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

ইউটিউব চ্যানেলের কার্যকারিতা ও সম্ভাবনা

নতুন চ্যানেলের মাধ্যমে ভোটার, প্রার্থী এবং সাধারণ মানুষ সহজেই নির্বাচনী তথ্য জানতে পারবে। এখানে থাকবে ভিডিও টিউটোরিয়াল, সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম এবং ভোটারদের জন্য গাইডলাইন।

এছাড়া, সাধারণ মানুষ ভিডিও কমেন্টের মাধ্যমে প্রশ্ন করতে পারবে এবং সরাসরি ইসি-র কর্মকর্তাদের কাছ থেকে উত্তর পেতে পারবে। এটি ভোটপ্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা এবং নাগরিক অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করবে।

জনগণের প্রতিক্রিয়া ও সমর্থন

ইসি কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন অনেকে। বিশেষ করে যুব সম্প্রদায় এবং শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, এটি ভোটার সচেতনতা বাড়াবে এবং অপতথ্য প্রতিরোধ করবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নির্বাচনের সময় ছড়ানো মিথ্যা তথ্যের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ইউটিউব চ্যানেল কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

বিশ্লেষক মতামত

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইসির এই উদ্যোগ নির্বাচনের স্বচ্ছতা এবং জনগণের আস্থা বৃদ্ধি করবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে তথ্য সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া বর্তমানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তারা আরও যোগ করেছেন, নাগরিকদের উচিত সোশ্যাল মিডিয়ায় তথ্য শেয়ার করার আগে যাচাই করা, যাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে ছড়ানো ভুয়া তথ্যের প্রভাব কমানো যায়।

পরিশেষে


নির্বাচন কমিশন দেশীয় ভোটারদের জন্য সহজ, নির্ভরযোগ্য তথ্য পৌঁছানোর লক্ষ্য নিয়ে তাদের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল উদ্বোধন করেছে। সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার সম্পর্কে সতর্ক করেছেন এবং নাগরিকদের সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

নির্বাচন কমিশনের নতুন ইউটিউব চ্যানেল ভোটারদের জন্য একটি সহজ, নির্ভরযোগ্য এবং স্বচ্ছ তথ্যের উৎস হবে। সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন নাগরিকদের সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার থেকে সাবধান থাকতে বলেছেন।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই উদ্যোগ দেশের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করবে এবং ভবিষ্যতের নির্বাচনে নাগরিক অংশগ্রহণ বাড়াবে। তবে তথ্য যাচাই এবং সচেতনতার গুরুত্ব অব্যাহত রাখতে হবে, যাতে প্রতিটি ভোটের মর্যাদা নিশ্চিত হয়।

এম আর এম – ০৯৮১, Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button