বিশ্ব

ইসরায়েলি এমপির ভিসা বাতিল করে অস্ট্রেলিয়া বলল, ‘তোমাকে এখানে চাই না’

Advertisement

প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলভুক্ত দেশ অস্ট্রেলিয়া কট্টর ডানপন্থী ইসরায়েলি সংসদ সদস্য সিমচা রথম্যানের ভিসা বাতিল করেছে। তার সফরের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টনি বার্ক নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, যারা দেশে এসে বিভাজন ছড়াতে চায়, তাদের ক্ষেত্রে সরকার কঠোর নীতি অবলম্বন করে। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, “আপনি যদি ঘৃণা ও বিভাজনের বার্তা ছড়াতে আসেন, তাহলে আমরা আপনাকে চাই না।”

সফরের প্রেক্ষাপট

রথম্যানকে অস্ট্রেলিয়ান জিউইশ অ্যাসোসিয়েশন (AJEA) আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। তার সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশটিতে ইহুদি সম্প্রদায়ের সঙ্গে দেখা করা এবং সম্প্রদায়ভিত্তিক বিভিন্ন সভায় অংশ নেওয়া। তবে সরকারের মতে, তার আগমনের মূল লক্ষ্য বিভাজন এবং বিতর্কমূলক বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া। তাই ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংস্থার প্রধান রবার্ট গ্রেগরি এই সিদ্ধান্তকে “ভয়ংকরভাবে ইহুদি বিদ্বেষমূলক” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এবং সতর্ক করেছেন যে, অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার আগে ইহুদি নাগরিকদের বিষয়টি ভাবা উচিত।

রথম্যানের রাজনৈতিক পরিচয়

সিমচা রথম্যান ইসরায়েলি সংসদের কনস্টিটিউশন, আইন ও বিচারবিষয়ক কমিটির প্রধান এবং সরকারের বিতর্কিত বিচার সংস্কারের নকশাকারী হিসেবে পরিচিত। তিনি প্রকাশ্যে কট্টর ডানপন্থী ও কট্টর ইহুদিবাদী অবস্থানের জন্যও আলোচিত। তার সমালোচকরা মনে করেন, রথম্যানের উপস্থিতি অস্ট্রেলিয়ায় সম্প্রদায়িক বিভাজন এবং বিদ্বেষের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

অস্ট্রেলিয়ার নীতি ও প্রতিক্রিয়া

অস্ট্রেলিয়া সাম্প্রতিক সময়ে মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক অবস্থানে কঠোর সমালোচনামূলক অবস্থান নিয়েছে। দেশটি শীঘ্রই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার পরিকল্পনা করছে। এই রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটও রথম্যানের সফর বাতিলের পেছনে প্রভাব ফেলে। টনি বার্কের মতে, অস্ট্রেলিয়া দেশটির নাগরিক ও সম্প্রদায়কে বিভাজনের হাত থেকে রক্ষা করতে পদক্ষেপ নিয়েছে।

প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনা

অস্ট্রেলিয়ান জিউইশ অ্যাসোসিয়েশন এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে। তারা জানায়, রথম্যানের সফরের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক কোনো ঘটনার সরাসরি সম্পর্ক নেই। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিভাজনমূলক বার্তা ছড়ানো যে কোনো কর্মকাণ্ড সরকার সহ্য করবে না। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত ইসরায়েলবিরোধী অবস্থানের প্রতিফলন। এর আগে অস্ট্রেলিয়া সাবেক ইসরায়েলি মন্ত্রী আয়েলেট শাকেদ এবং ব্লগার হিলেল ফুল্ডের ভিসাও বাতিল করেছিল।

আন্তর্জাতিক প্রভাব

রথম্যানের ভিসা বাতিল আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অস্ট্রেলিয়ার এই পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্য সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক অবস্থানকে প্রভাবিত করতে পারে। ইসরায়েলি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনও বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি, আর রথম্যানও প্রকাশ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া দেননি।

ভবিষ্যতের দিকে দৃষ্টি

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অস্ট্রেলিয়ার এই পদক্ষেপ কেবল প্রতিক্রিয়া নয়, বরং দেশের নীতি ও নিরাপত্তা রক্ষার প্রতিফলন। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি এখন এই সিদ্ধান্তের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া ও দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের দিকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিস্থিতি কীভাবে মোড় নেবে তা পরবর্তী প্রতিক্রিয়ার ওপর নির্ভর করবে।

এম আর এম – ০৯৩০, Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button