আঞ্চলিক

বাকিতে সিগারেট না দেয়ায় দোকানির কান কামড়ে ছিঁড়ে ফেললো ক্রেতা

Advertisement

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পচামাদিয়া গ্রামে বকেয়া সিগারেট না দেওয়াকে কেন্দ্র করে এক ক্রেতা দোকানির কান কামড়ে ছিঁড়ে ফেলেছে। সোমবার (১১ আগস্ট) বিকেলে ঘটে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা, যা পরবর্তীতে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরের মাধ্যমে জনসমক্ষে আসে। গুরুতর আহত অবস্থায় আহত দোকানদারকে স্থানীয়রা হাসপাতালে ভর্তি করায়। এ ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

ঘটনার বিবরণ

পচামাদিয়া গ্রামের মুদি দোকানদার আমানুজ্জামানের সঙ্গে প্রতিবেশী আসাদুজ্জামানের ছেলে সুমন হোসেনের মধ্যে সিগারেট নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়। সুমন বাকিতে সিগারেট চাইলে আমানুজ্জামান পূর্বের বকেয়া টাকা পরিশোধের কথা বলে সিগারেট দিতে অস্বীকার করেন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটি শুরু হয় এবং তা দ্রুত উত্তেজনাপূর্ণ রূপ নেয়।

কিছুক্ষণ পর সুমন দেশীয় অস্ত্র হাসুয়া নিয়ে দোকানদারের ওপর হামলা চালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এরপর সুযোগ বুঝে সে দোকানদারের ডান কানে কামড় দিয়ে তা ছিঁড়ে ফেলে। ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয়রা আহত অবস্থায় আমানুজ্জামানকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।

দৌলতপুর উপজেলার পচামাদিয়া গ্রামের এই ঘটনা এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। জানা যায়, সুমন এবং আমানুজ্জামানের মধ্যে পূর্বেও আর্থিক বিরোধ চলছিল। অনেক সময়ই সুমনের পরিবারের পক্ষ থেকে বকেয়া টাকা পরিশোধের দাবি করা হলেও সেভাবে নিষ্পত্তি হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে সামান্য একটি বিষয় নিয়ে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয়রা জানায়, এই ধরনের ঘটনা এলাকায় বিরল হলেও সামাজিক বিরোধের কারণে মাঝে মাঝে উত্তেজনা দেখা দেয়। দোকানিদের সঙ্গে ক্রেতাদের মধ্যে আর্থিক বকেয়া নিয়ে গণ্ডগোল হলে কখনো কখনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া

ঘটনাটি স্থানীয় এলাকায় উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। আহত দোকানদারের পরিবার মর্মাহত এবং ন্যায়বিচারের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা চায়। দৌলতপুর থানা পুলিশ ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে এবং লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোলাইমান শেখ জানান, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি এবং তদন্ত শুরু করেছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয় মানুষজন এ ধরনের ঘটনা সমাজে সহিংসতার মাত্রা বৃদ্ধি করার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তারা চান, এমন পরিস্থিতি যাতে আর না ঘটে এবং স্থানীয় শান্তি বজায় থাকে।

আইন ও সামাজিক প্রেক্ষাপট

বাংলাদেশে সামান্য বিরোধের জন্য এই ধরনের শারীরিক সহিংসতা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। বিশেষ করে আর্থিক বকেয়া বা ব্যবসায়িক বিরোধের জেরে এমন গুরুতর আঘাত দেয়া সামাজিক অবক্ষয়ের দিক নির্দেশ করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সমাজকর্মীদের উচিত এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া।

এছাড়াও, সচেতনতার অভাবে গ্রামীণ ও ছোট শহরের বাজারগুলোতে এ ধরনের সংঘর্ষ বেড়েই চলেছে। এই বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও সমাজকে যুক্ত করে কার্যকর সমাধান খুঁজে বের করা জরুরি।

ভবিষ্যতের করণীয়

এই ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সে জন্য স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি সমাজের সকল স্তরের মানুষকে সচেতন হতে হবে। ব্যবসায়িক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্যতা ও বিশ্বাসের ভিত্তি গড়ে তোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বকেয়া টাকা মিটিয়ে নেওয়া, শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য স্থানীয় নেতৃত্ব এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যস্থতা জরুরি। পাশাপাশি, স্থানীয় পর্যায়ে বিরোধ নিরসনে সমাজসেবা সংগঠন ও ন্যায়পরায়ণতা প্রচারেও গুরুত্ব দিতে হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, ঘটনার দ্রুত তদন্ত এবং যথাযথ বিচার অপরিহার্য যাতে স্থানীয়রা ন্যায়বিচারে আশ্বস্ত হয় এবং সামগ্রিক শান্তি বজায় থাকে।

এম আর এম – ০৮২৪, Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button