
২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে দুবাইতে ৩ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। স্থানীয় ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড চ্যারিটেবল অ্যাক্টিভিটিজ ডিপার্টমেন্ট (আইএসিএডি) এবং মুহাম্মদ বিন রাশিদ সেন্টার ফর ইসলামিক কালচার জানিয়েছে, তাদের প্রচার, শিক্ষা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম এই পরিবর্তনে বড় ভূমিকা রেখেছে।
ঘটনা
দুবাইয়ের ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড চ্যারিটেবল অ্যাক্টিভিটিজ ডিপার্টমেন্টের অধীনে থাকা মুহাম্মদ বিন রাশিদ সেন্টার ফর ইসলামিক কালচার এক ঘোষণায় জানিয়েছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে ৩৬০০ জনেরও বেশি ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করেছেন। এরা বিভিন্ন দেশের নাগরিক, যারা দুবাইতে বসবাস করছেন অথবা কাজের সুবাদে অবস্থান করছেন।
সংস্থাটি জানায়, নতুন মুসলিমদের ধর্মীয় জ্ঞান, সামাজিক সহযোগিতা এবং শিক্ষামূলক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে তাদের ইসলামের মৌলিক শিক্ষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত করা হয়।
শিক্ষামূলক ও সচেতনতামূলক উদ্যোগ
প্রতিষ্ঠানটির তথ্য অনুযায়ী, এ সময়কালে তাদের শিক্ষামূলক প্রোগ্রামে ১,৩০০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী নাম নথিভুক্ত করেছেন। এসব কোর্সে ইসলামী নীতি, নামাজ, রোজা, হজসহ অন্যান্য ইবাদতের পদ্ধতি শেখানো হয়।
এছাড়া তারা ৪৭টি জ্ঞান ও সচেতনতামূলক কোর্স আয়োজন করেছে, যেখানে ১,৪০০ জনেরও বেশি মানুষ অংশ নিয়েছেন। এই কোর্সগুলোতে ধর্মীয় সহনশীলতা, পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ওপর জোর দেওয়া হয়।
‘টেকসই জ্ঞান কক্ষ’ উদ্যোগ
নওমুসলিমদের জন্য “টেকসই জ্ঞান কক্ষ” নামের একটি বিশেষ উদ্যোগ চালু করেছে সেন্টারটি। এর মাধ্যমে ১৯০ জনেরও বেশি মানুষ নিয়মিতভাবে ইসলামী জ্ঞান লাভ করছেন। এখানে বিভিন্ন ভাষায় শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে, যাতে ভিন্ন দেশের মানুষ সহজে বিষয়গুলো বুঝতে পারেন।
আগের অভিজ্ঞতা
দুবাই দীর্ঘদিন ধরে ধর্মীয় সহনশীলতা ও সংস্কৃতির মেলবন্ধনের জন্য পরিচিত। পূর্ববর্তী বছরগুলোতেও ইসলাম গ্রহণের প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে, তবে সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষা ও প্রচার কার্যক্রম বাড়ায় এই সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
দুবাই সরকার এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ধর্মীয় সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আন্তঃধর্মীয় সংলাপের আয়োজন করছে, যা ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের কাছে ইসলামকে ইতিবাচকভাবে তুলে ধরছে।
বিশেষজ্ঞ ও কর্মকর্তাদের মন্তব্য
সেন্টারের পরিচালক জসিম আল খাজরাজি বলেন,
“আমরা সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় যোগাযোগের সেতুবন্ধন তৈরি করছি। সহনশীলতা, জ্ঞান এবং সংলাপের মাধ্যমে ইসলামের একটি উজ্জ্বল চিত্র উপস্থাপনই আমাদের লক্ষ্য।”
ধর্মীয় বিশ্লেষকরা মনে করেন, এ ধরনের উদ্যোগ কেবল দুবাইতেই নয়, বরং গোটা বিশ্বে ইসলামের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে পারে।
প্রভাব ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
এই প্রবণতা কেবল ধর্মীয় পরিবর্তনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং সমাজে সংস্কৃতির বৈচিত্র্য ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখছে।
আইএসিএডি ভবিষ্যতে আরও বেশি ভাষায় শিক্ষা প্রোগ্রাম চালু করার পরিকল্পনা করেছে। এছাড়া অনলাইন শিক্ষা প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে ইসলাম সম্পর্কে জানার সুযোগ তৈরি হবে।
সারসংক্ষেপ
দুবাইতে গত ছয় মাসে ৩৬০০ জনের ইসলাম গ্রহণের ঘটনা বিশ্বজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ধর্মীয় শিক্ষা, সহনশীলতা এবং সংস্কৃতির সংমিশ্রণে ইসলামকে ইতিবাচকভাবে তুলে ধরার যে প্রয়াস নেওয়া হয়েছে, তা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকলে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
এম আর এম – ০৮০২, Signalbd.com