বাংলাদেশ

জাতিসংঘ স্পেশাল র‍্যাপোর্টিয়ারের সাক্ষাৎ আইজিপির সঙ্গে

Advertisement

বাংলাদেশ পুলিশের মানবাধিকার রক্ষায় অঙ্গীকার, আধুনিক প্রযুক্তি ও আইন প্রয়োগের ওপর গুরুত্ব

ঢাকা, ২৯ জুলাই ২০২৫ – বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম আজ মঙ্গলবার সকালবেলায় পুলিশ সদর দপ্তরে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের বিশেষ র‍্যাপোর্টিয়ার ড. মরিস টিডবল বিঞ্জের সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এই বৈঠকটি ছিলো মানবাধিকার সংরক্ষণ ও পুলিশের আধুনিকায়ন নিয়ে গুরত্বপূর্ণ আলোচনা।

জাতিসংঘের সামারি অর অ্যারবিট্রেরি এক্সিকিউশনের স্পেশাল র‍্যাপোর্টিয়ার দায়িত্বে থাকা ড. মরিস টিডবল বিঞ্জ বাংলাদেশ পুলিশের মানবাধিকার সংক্রান্ত বিভিন্ন কার্যক্রম পর্যালোচনা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আইজিপির সঙ্গে বিস্তারিত আলাপ করেছেন।

সাক্ষাৎকালে বিশেষত পুলিশের ফরেনসিক ল্যাব, ময়নাতদন্ত পদ্ধতি এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়াও, আইন প্রয়োগে মানবাধিকারের স্বার্থে পুলিশের সুশৃঙ্খল ভূমিকা ও দায়িত্ব পালনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

আইজিপি বাহারুল আলম এই সাক্ষাতে বলেন, “বাংলাদেশ পুলিশ মানবাধিকার রক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। আমরা আইন প্রয়োগের প্রতিটি ক্ষেত্রে মানুষের মৌলিক অধিকারকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি এবং উন্নত প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি করছি।”

তিনি আরও বলেন, “মানবাধিকার রক্ষায় পুলিশের পদক্ষেপ গুলো নিরবচ্ছিন্নভাবে জোরদার করা হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতায় আমাদের এই প্রচেষ্টা আরও ফলপ্রসূ হবে বলে আমরা আশাবাদী।”

এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত আইজিপি (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) খোন্দকার রফিকুল ইসলাম, সিআইডির অতিরিক্ত আইজিপি মো. ছিবগাত উল্লাহ, ডিআইজি (কনফিডেনশিয়াল) মো. কামরুল আহসান এবং অতিরিক্ত ডিআইজি (স্পেশাল ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড এনআরবি অ্যাফেয়ার্স) মো. আশিক সাঈদ।

পুলিশ ও মানবাধিকার: বাংলাদেশের অঙ্গীকার

বাংলাদেশ পুলিশ দীর্ঘদিন ধরেই মানুষের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় কাজ করছে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিশেষ নজর দিয়েছে দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর প্রতি। এই কারণে পুলিশ বাহিনী তাদের কাজের পদ্ধতি আধুনিকায়ন ও দক্ষতা বৃদ্ধি করতে নানান উদ্যোগ নিয়েছে।

ফরেনসিক ল্যাবের আধুনিকায়ন, দোষীদের দ্রুত ও নিরপেক্ষ বিচারের ব্যবস্থা, ময়নাতদন্তে আধুনিক পদ্ধতি প্রবর্তন এবং তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার পুলিশ বাহিনীর অন্যতম প্রধান অগ্রগতি। এসব উদ্যোগের মাধ্যমে পুলিশের মানবাধিকার রক্ষার সক্ষমতা অনেকটাই বেড়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ভূমিকা ও বাংলাদেশের অগ্রগতি

জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য কাজ করে থাকে। বিশেষ করে স্পেশাল র‍্যাপোর্টিয়াররা নির্দিষ্ট বিষয় বা দেশ নিয়ে গবেষণা করে রিপোর্ট প্রদান করেন। বাংলাদেশে যেমন বিভিন্ন সময় মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে, সেসব বিষয় নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো নজর রাখে।

এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের পুলিশ প্রশাসন আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে নিজেদের মান উন্নয়ন এবং মানবাধিকার রক্ষায় ইতিবাচক ভূমিকা গ্রহণের জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। এ সাক্ষাৎ তারই অংশ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।

ফরেনসিক ল্যাব ও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার

বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশের ফরেনসিক ল্যাব অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রমাণ সংগ্রহ, বিশ্লেষণ ও অপরাধ তদন্তে ভূমিকা রাখছে। এর ফলে মামলা দ্রুত ও নির্ভুল তদন্তের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে ফরেনসিক ল্যাবের আধুনিকায়ন, ময়নাতদন্ত পদ্ধতির উন্নতি, ডিজিটাল ফরেনসিক ও তথ্য প্রযুক্তির ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এসব সেবা আরও উন্নত করার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা

আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, “আমরা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো ও উন্নত দেশের পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি করব। নতুন প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পুলিশের মান উন্নয়ন করা হবে।”

এই সাক্ষাতের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশের দায়িত্বশীলতা ও মানবাধিকারের প্রতি অঙ্গীকারের এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এর ফলে দেশের পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি উন্নত হবে এবং মানুষের আস্থা বৃদ্ধি পাবে।

 MAH – 12019, Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button