বাংলাদেশ

প্রবাসীদের ভোট: বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থায় নতুন যুগের সূচনা

প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং নির্বাচনী ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। দীর্ঘ ৫৩ বছর ধরে বঞ্চিত এই বিশাল জনগোষ্ঠীর ভোটাধিকার যদি নিশ্চিত করা যায়, তাহলে এটি দেশের নির্বাচন ব্যবস্থায় একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।

প্রবাসীদের ভোটাধিকার: বর্তমান পরিস্থিতি

সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষণা দিয়েছে, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে কাজ চলছে। বিজয় দিবসে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা আমাদের সরকারের অঙ্গীকার। অতীতে এটি বারবার উপেক্ষিত হয়েছে। এবার তা বাস্তবায়ন হবে।”

প্রবাসীদের ভোটের গুরুত্ব

বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় ৭.৫% এবং ভোটারের ১০% প্রবাসী। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১২.৫ মিলিয়ন মানুষ দেশের বাইরে কাজ করে। তাদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতির দ্বিতীয় বৃহত্তম বৈদেশিক মুদ্রার উৎস।

এছাড়া, প্রবাসীরা দেশের রাজনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন এবং প্রায়ই দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত থাকেন।

ভোটাধিকারের জন্য কাঠামো প্রয়োজন

প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। ২০০৮ সালে পোস্টাল ব্যালট পদ্ধতি চালু হলেও তা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ ছিল।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিরাপদ অনলাইন ভোটিং ব্যবস্থা বা দূতাবাস ভিত্তিক সরাসরি ভোটিং ব্যবস্থা কার্যকর হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে তুরস্কের নির্বাচন ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করা হয়, যেখানে প্রবাসীরা দূতাবাসে গিয়ে সরাসরি ভোট দিতে পারেন।

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে প্রবাসীদের ভূমিকা

প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত হলে নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণ দেশের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করবে। এটি নির্বাচন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধি করবে।

নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. জাহেদ উর রহমান বলেন, “প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা একটি সাংবিধানিক দায়িত্ব। এটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থায় একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব।”

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button