বিশ্ব

ইরানের সেই সাহসী উপস্থাপিকা পাচ্ছেন ‘সিমন বলিভার’ পুরস্কার

Advertisement

ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাঝেও দায়িত্ব থেকে সরে আসেননি ইরানি উপস্থাপিকা সাহার এমামি। তাঁর এই ব্যতিক্রমী সাহসিকতার স্বীকৃতি হিসেবে তাঁকে ভূষিত করেছে ভেনেজুয়েলা সরকার। জাতীয় সাংবাদিক দিবসে ইরানের শহীদ সাংবাদিকদের সম্মানেও দেওয়া হয়েছে আন্তর্জাতিক এই সম্মাননা।

ঘটনার বিস্তারিত 

শনিবার (২৮ জুন) এক বিশেষ অনুষ্ঠানে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো ইরানে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত আলি চেগিনির হাতে এই সম্মানজনক পুরস্কার তুলে দেন। একই অনুষ্ঠানে ১৬ জুন ইসরায়েলি হামলায় নিহত ইরানি সাংবাদিকদেরও সম্মান জানানো হয়।

সাহার এমামি রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার সংস্থা IRIB-এর উপস্থাপক হিসেবে সরাসরি সম্প্রচারে ছিলেন সেই সময়, যখন ইসরায়েল তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। বিস্ফোরণে ভবন কেঁপে উঠলেও সাহার কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার লাইভ সম্প্রচারে ফিরে আসেন।

১৩ জুন থেকে ইরানের বিভিন্ন পরমাণু ও সামরিক স্থাপনায় হামলা চালাতে শুরু করে ইসরায়েল। এর ধারাবাহিকতায় ১৬ জুন হামলা চালানো হয় রাজধানী তেহরানের IRIB প্রধান কার্যালয়ে। সেদিন আহত হন অনেক সাংবাদিক, কয়েকজন নিহতও হন।
এই হামলা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চরম নিন্দার জন্ম দেয়। আর সেই সময় সাহার এমামির দায়িত্ব পালনের দৃশ্য বিশ্বজুড়ে ভাইরাল হয়। অনেকেই তাঁকে ‘সাহসিকতার প্রতীক’ বলে আখ্যায়িত করেন।

প্রতিক্রিয়া ও সম্মাননা 

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরো বলেন,
“সাহসিকতা, প্রতিরোধ ও সাংবাদিকতার প্রতি দায়িত্ববোধের অনন্য উদাহরণ হয়ে উঠেছেন সাহার এমামি। এই পুরস্কার শুধু একজন ব্যক্তির জন্য নয়, এটি পুরো ইরানি জাতির প্রতিরোধের প্রতীক।”

অনুষ্ঠানে ভেনেজুয়েলার সরকার, মিডিয়া কর্মী ও জনগণ করতালি দিয়ে সাহসী সাংবাদিকতাকে সম্মান জানান। অনুষ্ঠানটি জাতীয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

সাংবাদিকতার মর্যাদা ও আন্তর্জাতিক বার্তা 

এই সম্মাননা শুধু সাহারের নয়, বরং তা গোটা সাংবাদিকতা পেশার প্রতি শ্রদ্ধার প্রতীক। যুদ্ধকালীন সময়ে সাংবাদিকদের সাহসিকতা বারবার প্রমাণ করে দিয়েছে — সত্য ও তথ্য প্রচারে তারা কখনও পিছিয়ে থাকে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, “এটি এক নতুন বার্তা: সাংবাদিকতার স্বাধীনতা ও দায়িত্ব আজকের দুনিয়ায় যতই হুমকির মুখে পড়ুক, সাহসী কণ্ঠগুলো কখনও থেমে যাবে না।”

ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গি 

ভেনেজুয়েলার এই সম্মাননা ইরানের মিডিয়া জগতকে যেমন অনুপ্রাণিত করবে, তেমনি বিশ্বজুড়ে যুদ্ধক্ষেত্রে থাকা সাংবাদিকদের সাহসকে উৎসাহিত করবে।
সাহার এমামির মতো সাহসী নারীরা আজকের বিশ্বে প্রমাণ করছেন — মাইক্রোফোন আর ক্যামেরাও প্রতিরোধের প্রতীক হতে পারে।

এম আর এম – ০১০৪, Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button