সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ নিশ্চিত করা জরুরি: ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
শ্বেতপত্র কমিটির প্রধান ও সিপিডির সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে সরকারের উপস্থাপিত তথ্যগুলো অতিরঞ্জিত। তিনি মনে করেন, জিডিপির প্রকৃত চিত্র বের করতে একটি স্বাধীন কমিটি গঠন করা জরুরি।
গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে কসমস ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, “জাতীয় উন্নয়নের সঠিক তথ্য-উপাত্ত নিশ্চিত করতে আমাদের পরিসংখ্যান প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীন কমিশনে রূপান্তর করতে হবে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, গত ১৫ বছরে দেশের অর্থনীতির আকার সাড়ে ৪০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে বলে দাবি করা হলেও, এর সঙ্গে বেসরকারি বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের ভারসাম্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। রাজনৈতিক সুবিধার জন্য উন্নয়নের তথ্য অতিরঞ্জিত হয়েছে বলেও তিনি মনে করেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অর্থনীতির প্রকৃত অবস্থা নির্ধারণের জন্য উন্নয়নের পরিসংখ্যানকে বৈজ্ঞানিক ও আধুনিক ভিত্তিতে দাঁড় করানো জরুরি।
সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রয়োজন
ড. দেবপ্রিয় বলেন, “এই মুহূর্তে বাংলাদেশের জন্য সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিনিয়োগকারীরা আসবে না, যদি নীতিমালা ও পরিবেশে ধারাবাহিকতা বজায় না থাকে। পাশাপাশি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাও অপরিহার্য।”
তিনি আরও বলেন, “ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ এবং নীতিমালার স্থায়িত্ব বজায় রাখতে হবে। সরকারি কেনাকাটা ও প্রকল্পে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ই-জিপি পদ্ধতির আরও উন্নতি দরকার।”
টেকসই উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা
মতবিনিময়ে বক্তারা টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বিদ্যুৎ-জ্বালানি, সামাজিক কর্মসূচি, ব্যাংক খাত ও গ্রামীণ শিক্ষাব্যবস্থায় সংস্কারের তাগিদ দেন। এছাড়া, রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পগুলো বেসরকারি খাতে ছেড়ে দিয়ে জনগণের করের টাকায় ভর্তুকি কমানোর প্রস্তাবও উঠে আসে।
অর্থনীতিবিদ পারভেজ করিম আব্বাসী বলেন, “জনপ্রশাসনে কর্মরতদের সুযোগ-সুবিধা বেড়েছে। এভাবে সরকারের শাসনকাল দীর্ঘায়িত হয়েছে। এখন আমাদের কার্যকর পরিকল্পনা নিতে হবে, কত বড় প্রশাসনিক কাঠামো টিকিয়ে রাখা সম্ভব। দক্ষতা ও পেশাদারিত্ব বাড়াতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগও একটি বিকল্প হতে পারে।”
প্রবাসী আয়ের ভূমিকা ও রপ্তানি বৈচিত্র্যের প্রয়োজন
বিশ্লেষকরা আরও বলেন, “প্রবাসী আয়ের ওপর নির্ভর করেই অর্থনীতি অনেক দিন ধরে স্থিতিশীল আছে। তবে এলডিসি থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় রপ্তানিপণ্যের বৈচিত্র্য আনতে হবে এবং নতুন বাজার খুঁজতে হবে।