যুক্তরাষ্ট্রে স্টুডেন্ট ভিসার আবেদনকারীদের জন্য নতুন নির্দেশনা : সোশ্যাল মিডিয়া রাখতে হবে পাবলিক

এফ, এম এবং জে ক্যাটাগরির ভিসার আবেদনকারীদের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রাইভেসি সেটিংস পাবলিক রাখা বাধ্যতামূলক নয়, তবে মার্কিন দূতাবাস তা সুপারিশ করেছে—যাতে দ্রুত ও সহজ হয় আবেদন যাচাই।
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন আপডেট শিক্ষার্থী ভিসা আবেদনকারীদের জন্য
যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার জন্য যারা আবেদন করতে যাচ্ছেন, তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, ‘এফ’, ‘এম’ এবং ‘জে’ ক্যাটাগরির স্টুডেন্ট ও এক্সচেঞ্জ ভিসার আবেদনকারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম (যেমন: Facebook, Instagram, Twitter ইত্যাদি) অ্যাকাউন্টের গোপনীয়তা (Privacy) সেটিংস পাবলিক রাখতে বলা হয়েছে।
এই নির্দেশনা কেন?
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার অ্যাফেয়ার্স বিভাগের মতে, আবেদনকারীর পরিচয় যাচাই এবং তার যোগ্যতা দ্রুত ও সঠিকভাবে মূল্যায়নের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট পাবলিক থাকা জরুরি। এতে ইমিগ্রেশন অফিসাররা আবেদনকারী সম্পর্কে আরও স্পষ্ট ও পর্যাপ্ত তথ্য সহজে পর্যালোচনা করতে পারবেন।
“ভিসা আবেদনকারীর সোশ্যাল মিডিয়ায় পাবলিক প্রোফাইল থাকার ফলে আমাদের যাচাই প্রক্রিয়া অনেকটাই দ্রুত হয়”—মার্কিন দূতাবাস
আগে থেকেই ছিল সোশ্যাল মিডিয়ার বাধ্যবাধকতা
২০১৯ সাল থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা আবেদনকারীকে তার সোশ্যাল মিডিয়া আইডেন্টিফায়ার (ইউজারনেম) জমা দিতে হয়। এটি শুধু স্টুডেন্ট নয়, বরং সব অভিবাসী (ইমিগ্র্যান্ট) এবং অধিবাসী (নন-ইমিগ্র্যান্ট) ভিসার ক্ষেত্রেই বাধ্যতামূলক।
নতুন নির্দেশনায় স্পষ্টভাবে বলা হয়নি যে প্রাইভেসি পাবলিক রাখা বাধ্যতামূলক, তবে এটি সুপারিশ করা হয়েছে যাতে প্রোফাইল পর্যবেক্ষণ সহজ হয়।
জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে তথ্য যাচাই
মার্কিন সরকারের মতে, জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আবেদনকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য—বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের তথ্য—একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে কাজ করে। এতে নিরাপত্তা হুমকি শনাক্ত করা সহজ হয় এবং সম্ভাব্য অনুপযুক্ত আবেদনকারীদের আগেই চিহ্নিত করা যায়।
কারা পড়বে এই নির্দেশনার আওতায়?
নিম্নোক্ত ক্যাটাগরির আবেদনকারীদের জন্য এই নির্দেশনা প্রযোজ্য:
- F ভিসা: শিক্ষার্থীদের জন্য
- M ভিসা: পেশাগত বা টেকনিক্যাল শিক্ষা গ্রহণকারীদের জন্য
- J ভিসা: এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের অংশগ্রহণকারীদের জন্য
এইসব আবেদনকারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রাইভেসি ‘Friends only’ বা ‘Private’ রাখলে দূতাবাস প্রয়োজনীয় তথ্য পর্যবেক্ষণে সমস্যায় পড়তে পারে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ।
প্রভাব কী হতে পারে?
বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের সুপারিশের ফলে আবেদনকারীদের মাঝে কিছুটা অনিশ্চয়তা তৈরি হতে পারে। অনেকে হয়তো ব্যক্তিগত গোপনীয়তা হারানোর শঙ্কায় পাবলিক প্রোফাইল রাখতে অনীহা প্রকাশ করতে পারেন।
তবে মার্কিন কর্তৃপক্ষ বলছে, এটি আবেদন সহজ ও স্বচ্ছ করতে সহায়ক হবে।
আবেদনকারীদের জন্য কিছু প্র্যাকটিক্যাল টিপস
- ভিসা আবেদন করার আগে আপনার সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলগুলো যাচাই করুন
- অপ্রাসঙ্গিক বা বিতর্কিত পোস্ট থাকলে সরিয়ে ফেলুন
- প্রোফাইলের বায়ো, ছবি ও পরিচিতি অংশ হালনাগাদ করুন
- কমপক্ষে ২-৩টি প্ল্যাটফর্মে প্রোফাইল পাবলিক রাখুন
- যাচাইযোগ্য তথ্য ও পরিচয় নিশ্চিত করুন
ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা
বিশ্লেষকদের মতে, ভবিষ্যতে আরও বেশি ডিজিটাল ডেটা-নির্ভর যাচাই প্রক্রিয়া চালু হতে পারে বিভিন্ন দেশের ভিসা বিভাগে। যুক্তরাষ্ট্রের এই নির্দেশনা হয়তো অন্যান্য দেশেও প্রভাব ফেলতে পারে।
“ভবিষ্যতের ভিসা প্রক্রিয়ায় প্রাইভেসি ও নিরাপত্তার ভারসাম্য বজায় রাখা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে”—বিশ্লেষক মতামত
উপসংহার
যুক্তরাষ্ট্রে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদনকারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বচ্ছতা ও সতর্কতা বজায় রাখা এখন সময়ের দাবি। আবেদন সহজ, স্বচ্ছ ও দ্রুত করতে নিজ নিজ প্রোফাইল পাবলিক রাখার অনুরোধ বাস্তবিক অর্থেই প্রভাব ফেলবে ভিসা প্রাপ্তির প্রক্রিয়ায়।এম আর এম – ০০৭০, Signalbd.com