শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্ষণ মামলায় দুই ছাত্র ৪ দিনের রিমান্ডে

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সাবেংউ) এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা দুই ছাত্রের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ সোমবার (২৩ জুন) সিলেটের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এই রিমান্ড আদেশ দেন।
ধর্ষণ মামলার বিস্তারিত
গত ২ মে, সাবেংউর এক ছাত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেসে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী স্বাগত দাস (পার্থ) ও শান্ত তারা (আদনান) নামে দুই ছাত্রের বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন তদন্ত ও অনুসন্ধানের পর ১৯ জুন ভুক্তভোগী ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। এরপরই পুলিশ দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে।
আদালতে ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
মামলার তদন্তের স্বার্থে পুলিশ পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। তবে, উভয় পক্ষের আইনজীবীর যুক্তিতর্কের পর আদালত চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন উপদেষ্টা মো. তাজউদ্দিন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, “মামলার তদন্ত দ্রুত ও গভীরভাবে সম্পন্ন করতে চার দিনের রিমান্ড দেওয়া হয়েছে।”
আদালতের সামনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
আজ রিমান্ড শুনানির সময় আদালতের চত্বরে প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। তারা আদালতের এজলাস কক্ষে অবস্থান নিয়ে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির দাবিতে স্লোগান দেন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেয়।
বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আসামি দুজনকে আদালত থেকে প্রিজন ভ্যানে করে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
ধর্ষণ মামলার প্রেক্ষাপট ও সামাজিক প্রভাব
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের ঘটনা ঘটে যাওয়া খুবই উদ্বেগজনক। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা থাকা অত্যন্ত জরুরি। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতার ঘটনাগুলো শিক্ষাজগত ও সমাজের জন্য দৃষ্টান্তমূলক বার্তা হিসেবে কাজ করছে।
এই মামলার দ্রুত ও ন্যায়সঙ্গত বিচার অনেকেরই আশা। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষায় প্রশাসন ও আইনি ব্যবস্থা কড়াকড়ি অবলম্বন করছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও এ ঘটনার দ্রুত নিষ্পত্তি ও পুনরায় এমন ঘটনা না ঘটার নিশ্চয়তার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
সমাজে ধর্ষণ মোকাবেলায় করণীয়
ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন ও সহিংসতা মোকাবেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করতে সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। পাশাপাশি, ধর্ষণের শিকার নারীদের মানসিক ও আইনগত সহায়তা দেওয়া উচিত।
সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে শিক্ষার্থীরা শিক্ষায় মনোযোগ দিতে পারে এবং নিরাপদ ও সম্মানজনক পরিবেশে জীবন যাপন করতে পারে।