সোনার দাম ভরিতে ২ হাজার ১৯২ টাকা বেড়েছে
শনিবার রাতে এক ঘোষণায় জানিয়েছে, আগামী রোববার থেকে ২২ ক্যারেট মানের সোনার দাম প্রতি ভরিতে (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২ হাজার ১৯২ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৭৪ হাজার ৫২৮ টাকা।
এ ছাড়াও, ২১ ক্যারেট সোনার দাম ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৭ টাকা এবং ১৮ ক্যারেটের দাম দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪২ হাজার ৮০২ টাকায়। দেশের সনাতন পদ্ধতিতে তৈরি সোনার দামও বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ১৮ হাজার ১৬৮ টাকা।
সোনার দাম বৃদ্ধির কারণ
বাজুসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে বিশুদ্ধ সোনার (পিওর গোল্ড) দামের ঊর্ধ্বগতি এবং দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে সোনার চাহিদা বৃদ্ধির কারণে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। বিশ্বের শেয়ার বাজার ও অর্থনীতির অস্থিরতার কারণে সোনার প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে, যা স্থানীয় সোনার দামে প্রভাব ফেলছে।
সোনার দাম বৃদ্ধির পরিসংখ্যান
- ৬ জুন ২০২৫: ২২ ক্যারেট সোনার দাম ছিল প্রতি ভরিতে ১ লাখ ৭২ হাজার ৩৩৬ টাকা।
- ২৩ এপ্রিল ২০২৫: দেশে সোনার সর্বোচ্চ দাম ছিল প্রতি ভরিতে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৮৮ টাকা, যা ৫ হাজার ৩৪২ টাকা বেড়েছিল।
- ১৪ জুন ২০২৫: নতুন দাম নির্ধারণ হলো ১ লাখ ৭৪ হাজার ৫২৮ টাকা, যা পূর্বের দামের তুলনায় ২ হাজার ১৯২ টাকা বেশি।
সোনার বাজারের বর্তমান অবস্থা
দেশের সোনার বাজারে এই মূল্য বৃদ্ধির ফলে সোনায় বিনিয়োগকারীরা একদিকে লাভবান হবেন, অন্যদিকে গয়নার দামও বাড়তে পারে। এখনো পর্যন্ত রুপার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে, যা বাজারে সাময়িক স্থিতিশীলতার সংকেত দেয়। তবে, সোনার দাম ওঠানামা অব্যাহত থাকায় বিনিয়োগকারীদের জন্য সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
সোনায় বিনিয়োগের গুরুত্ব ও সতর্কতা
বিশ্বজুড়ে সোনা দীর্ঘদিন ধরে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচিত। মূল্যস্ফীতি, বিশ্ব অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং মুদ্রার অবমূল্যায়নের সময় সোনা বিনিয়োগকারীদের জন্য সুরক্ষিত আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করে। তবে, সোনার দাম ওঠানামার কারণে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের বাজার পরিস্থিতি বুঝে সতর্কতার সঙ্গে লেনদেন করতে হবে।
বাংলাদেশে সোনার চাহিদা বৃদ্ধি
বাংলাদেশে গহনা ও সোনার প্রতি চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। বিশেষ করে বিবাহ, পূজা এবং উৎসবের মৌসুমে সোনার ক্রয়-বিক্রয় তীব্র হয়ে ওঠে। এছাড়া বৈশ্বিক সংকট ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তায় অনেক মানুষ সোনায় বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হচ্ছেন।
বাজুসের ঘোষণার প্রভাব
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির এই দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেশের বাজারে সোনার ব্যবসায় ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। দেশের বাজারে গয়না কারিগর, খুচরা বিক্রেতা ও ক্রেতাদের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। দাম বৃদ্ধির ফলে অনেক ক্রেতা সাময়িকভাবে সোনায় বিনিয়োগে বিরত থাকতে পারেন, তবে দীর্ঘ মেয়াদে সোনার মূল্য বৃদ্ধি ব্যবসায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
সার্বিকভাবে সোনার বাজারের ভবিষ্যৎ
বিশ্ব অর্থনীতির অনিশ্চয়তা ও মূল্যস্ফীতির মধ্যে সোনার চাহিদা আরো বাড়তে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। তাই, আগামী মাসগুলোতে সোনার দাম আরও পরিবর্তিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার মূল্য বাড়লে তা দেশের বাজারেও প্রতিফলিত হবে।
দেশের সোনার বাজারে প্রতিনিয়ত ওঠানামা হচ্ছে। এই সময় বিনিয়োগকারীদের বাজার পরিস্থিতি মনোযোগ সহকারে পর্যবেক্ষণ করা জরুরি। বাজুসের নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, আগামীকাল থেকে দেশের বাজারে সোনার দাম নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে। তাই যারা সোনায় বিনিয়োগ করতে চান বা গয়না কেনার পরিকল্পনা করছেন তাদের জন্য এই তথ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সোনার দাম বৃদ্ধি দেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক এবং এটি বিনিয়োগকারীদের জন্য দিকনির্দেশক হিসেবে কাজ করবে।
