‘কালো মানিক’ গ্রহণ করেননি খালেদা জিয়া

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সম্প্রতি একটি বিশেষ উপহার গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পটুয়াখালীর কৃষক সোহাগ মৃধা তার ছয় বছরের যত্নে লালিত ষাঁড় ‘কালো মানিক’ ঈদুল আজহায় কোরবানির জন্য খালেদা জিয়াকে উপহার দিতে চেয়েছিলেন। তবে নেত্রী এই উপহার গ্রহণ না করে, সোহাগকে নিজ এলাকায় ফিরে গিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কোরবানি করার নির্দেশ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, “গরুর মালিকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান। সোহাগ মৃধা ও তার পরিবারের জন্য ঈদ উপহার দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।”
‘কালো মানিক’—একটি ভালোবাসার প্রতীক
সোহাগ মৃধা ২০১৮ সালের শেষ দিকে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার উত্তর ঝাটিবুনিয়া গ্রামের চৈতা বাজার থেকে মাত্র ১ লাখ ৩৭ হাজার টাকায় একটি গাভী কিনেছিলেন। সেই গাভীর বাছুরই আজকের এই কালো মানিক। ছয় বছরের যত্ন আর কঠোর পরিশ্রমে আজ মানিক এক বিশাল ষাঁড়ে পরিণত হয়েছে। পশুটির ওজন প্রায় ৩৫ মণ, দৈর্ঘ্য ১০ ফুট, উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি।
সোহাগের এই প্রচেষ্টা এবং ভালোবাসা শুধুমাত্র একটি পশু লালন-পালনের গল্প নয়; এটি একজন কৃষকের স্বপ্ন, পরিশ্রম এবং আত্মত্যাগের প্রতীক। তিনি এই ষাঁড়টিকে খালেদা জিয়ার প্রতি তার ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে উপহার দিতে চেয়েছিলেন।
খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্তের পেছনের কারণ
খালেদা জিয়া এই উপহার গ্রহণ না করার পেছনে যে মানবিকতা এবং রাজনৈতিক প্রজ্ঞা দেখিয়েছেন, তা প্রশংসনীয়। তিনি বুঝতে পেরেছেন যে, সোহাগের মতো একজন কৃষকের জন্য এই ষাঁড় কেবল একটি পশু নয়; এটি তার পরিশ্রম, ভালোবাসা এবং আত্মত্যাগের ফল। তাই তিনি সোহাগকে নিজ এলাকায় ফিরে গিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কোরবানি করার নির্দেশ দিয়েছেন।
এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে খালেদা জিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন—রাজনীতির বাইরে গিয়ে সাধারণ মানুষের পরিশ্রম এবং আত্মত্যাগকে সম্মান জানানো উচিত।
সোহাগ মৃধার প্রতিক্রিয়া
খালেদা জিয়ার এই সিদ্ধান্তে সোহাগ মৃধা কেমন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন, তা জানা যায়নি। তবে ধারণা করা যায়, তিনি নেত্রীর এই মানবিক সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়েছেন এবং নিজ এলাকায় ফিরে গিয়ে কোরবানি করবেন।
সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে। অনেকে খালেদা জিয়ার মানবিক সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন, আবার কেউ কেউ সোহাগ মৃধার পরিশ্রম এবং ভালোবাসার প্রশংসা করেছেন। এই ঘটনাটি একটি সুন্দর দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে—কিভাবে একজন নেতা সাধারণ মানুষের অনুভূতি এবং পরিশ্রমকে সম্মান জানাতে পারেন।
খালেদা জিয়ার এই সিদ্ধান্ত আমাদের শেখায় যে, রাজনীতির বাইরে গিয়ে সাধারণ মানুষের পরিশ্রম এবং আত্মত্যাগকে কিভাবে সম্মান জানানো যায়। সোহাগ মৃধার মতো কৃষকদের পরিশ্রম এবং ভালোবাসা আমাদের সমাজের জন্য একটি প্রেরণা। এই ঘটনাটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, মানবিকতা এবং সহানুভূতি সবসময় রাজনীতির ঊর্ধ্বে।