বিশ্ব

গাজায় নিঃসন্দেহে যুদ্ধাপরাধ করেছে ইসরায়েল: ম্যাথু মিলার

গত ২ জুন ২০২৫ সালে সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে “যুদ্ধাপরাধ” হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ফিলিস্তিনের গাজা অঞ্চলে ইসরায়েল যে সামরিক অভিযান চালিয়েছে, সেখানে অসংখ্য নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিক নিহত ও আহত হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের পরিপন্থি। তাঁর এই মন্তব্য অংশ হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে স্কাই নিউজের পডকাস্ট “ট্রাম্প ১০০”-এ। সাক্ষাৎকারে মিলার জানান, তাঁর কাছে কোনো সন্দেহ নেই, গাজায় ইসরায়েল যুদ্ধাপরাধ করেছে ।

মিলার ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর কাজ ছিল বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংকট ও ঘটনা নিয়ে নিয়মিত ব্রিফিং করা এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অবস্থান তুলে ধরা। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে তাঁর পদত্যাগের পর ব্যক্তিগত পর্যায়ে এসব বিষয় নিয়ে বক্তব্য দেওয়ার স্বাধীনতা পেয়েছেন। সাক্ষাৎকারে গাজায় ইসরায়েলের অভিযান নিয়ে প্রশ্ন করা হলে, মিলার বলেন, “আমি মনে করি না এটা গণহত্যা, কিন্তু যুদ্ধাপরাধ হয়েছে—এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই” ।

গাজা সংকটের পটভূমি

৭ অক্টোবর ২০২৩ সালে হামাসের গাজা থেকে ইসরায়েলি এলাকায় সাঁতারের হামলা শুরু হয়, যার পরের দিন ইসরায়েল প্রতিহিংসামূলক আক্রমণ শুরু করে। এরপর থেকে গাজায় ধ্বংসযজ্ঞ আর শাহাদাতের ধারাবাহিকতা শুরু হয়।

  • জনসংখ্যা বিপর্যয়: গাজা অঞ্চলের প্রায় ২০ লক্ষ খ্রিষ্টান ও মুসলিম বাসিন্দা জীবনের জন্য লড়াই করছেন। ২০২৫ সালের মে মাস পর্যন্ত গাজায় প্রায় ৫২,৬৫৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১১৮,৮৯৭ জন নিহত হয়েছে ।
  • অনৈতিক বিধ্বংস: গাজায় স্কুল, হাসপাতাল, আবাসন ও অবকাঠামো লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়, যেখানে অসংখ্য নিরপরাধ মহিলা ও শিশু নিহত হয়েছে। ইউনিসেফ, ইউএনআরডব্লিউএ, ডব্লিউএইচওসহ জাতিসংঘ বিভিন্ন রিপোর্টে এই পরিস্থিতিকে “মানবতার সংকট” হিসেবে অভিহিত করেছে ।

২০২৫ সালের মার্চ মাসে এক হাসপাতাল ও স্কুলে ইসরায়েলি বিমান হামলার ফলে কমপক্ষে ৪১৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও ৫২৮ জন আহত হয় । ওই একই সময়ে রাফায় ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে ইসরায়েলের গুলিতে অন্তত ৩১ জন নিহত হয় এবং ১২০ জনের বেশি আহত হয়েছে ।

গত বছরের জুন মাসে ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর হামলায় কয়েকটি স্কুল সরাসরি লক্ষ্য করা হয়, যেখানে শরণার্থীরা আশ্রয় নিয়েছিল। সেই হামলায় ছয়টি স্কুল ধ্বংস হয় এবং ১২০ জনের বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে । ইউনরওয়ার সংস্থা জানায়, গাজায় ১.৯ মিলিয়ন মানুষ গৃহহীন হয়েছে এবং ৯০ শতাংশ জনগণ বারবার স্থানচ্যুত হয়েছে ।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার এবং আইনি খুঁটিনাটি

যুদ্ধাপরাধের সংজ্ঞা

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন (যেমন: জেনেভ কনভেনশন) অনুযায়ী,

  • আদমঘাত (Genocide): কোনও জাতি, ধর্ম বা উপজাতিকে ধ্বংসের লক্ষ্যে পরিকল্পিত পদক্ষেপ।
  • যুদ্ধাপরাধ: গৃহিত যুদ্ধিক নীতির পরিপন্থী, বেসামরিক নাগরিকের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত আক্রমণ, অথবা নিরপরাধ মানুষ হত্যার ঘটনাকে বলা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) এসব ক্ষেত্রে তদন্ত করে, তবে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র ICC–র সদস্য নয়, ফলে সরাসরি বিচার বেঠিক হতে পারে না ।

গণহত্যা নাকি যুদ্ধাপরাধ?

মিলার সরাসরি “গণহত্যা” শব্দটি ব্যবহার করেননি, তবে “যুদ্ধাপরাধ” এ বিষয়ে কোনো আপত্তি নেই বলে মন্তব্য করেন । সাম্প্রতিক রিপোর্টে ইউনাইটেড নেশনস ত্রৈমাসিক বাজাজমতে, “ইসরায়েল কর্তৃক অব্যাহত বোমাবর্ষণ, সীমাবদ্ধতা ও অবরোধের ফলে গাজায় গণহত্যা ঘটছে” — এমন অনেকেই দাবি করেছেন । তবে, গণহত্যার সংজ্ঞা প্রয়োগ ও প্রমাণের জন্য নির্দিষ্ট “উদ্দেশ্য” প্রমাণ করতে হয়, যা নেটানিয়াহুর সরকার অস্বীকার করছে।

আন্তর্জাতিক তদন্ত ও প্রতিবেদন

  • বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা: ৩০ জুন ২০২৪ পর্যন্ত গাজায় কমপক্ষে ৬৪,২৬০ জন মারাত্মক আঘাতজনিত কারণে নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়, যা সরকারি তথ্যের চেয়েও ৪১% বেশি ।
  • ওসিএইচএ (OCHA): ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৬৭০টি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র হামলার শিকার হয়, ৮৮৬ জন মারা যায় এবং ১,৩৫৫ জন আহত হয় ।
  • ইউএনআরডব্লিউএ: গাজার ১১৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৯০,০০০ হারিয়ে যাওয়া মানুষ বসবাস করছে; গাজার অন্তত ১.৯ মিলিয়ন মানুষ বেসামরিক আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে হয়েছে ।

এসব তথ্য মিলিয়ে দেখা যায় যে, গাজার অবস্থা একেবারেই মানবতা ও আইনগত দিক থেকে অগ্রহণযোগ্য। ইউনিসেফ জানান যে, গাজার শিশুদের এক তৃতীয়াংশের বেশি অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় বাস করছে; লাখ লাখ মানুষ পানীয় জল, খাদ্য ও চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত ।

ম্যাথু মিলারের বক্তব্যের গুরুত্ব

তার অভিজ্ঞতা ও দায়িত্ব

মিলার বাইডেন প্রশাসনে তিন বছর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ছিলেন। সেই সময় তিনি নিয়মিত ব্রিফিংয়ে অংশ নিয়ে প্রশাসনের নীতি তুলে ধরেছেন । কারণিকভাবে, তিনি সরকারি অবস্থানের বাইরে কথা বলেছেন। তার মতামত পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্ণধার বা সরকারি নীতি নয়; তবে, তাঁর অভিজ্ঞতা ও নীতি-গঠনের পেছনের প্রেক্ষাপট বোঝাতে সাহায্য করে।

বাইডেন প্রশাসনের ভেতর বিতর্ক

মিলার জানান, গাজা-ইসরায়েল নীতি নিয়ে প্রশাসনের ভেতর বড়-ছোট দুই ধরনের মতবিরোধ ছিল। বড় ধরনের বিতর্ক ছিল নীতি কীভাবে পরিচালিত হবে, ছোট ধরনের ছিল কীভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা হবে। তৎকালীন পররাস্ত্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও অন্যান্য শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে গাজা এবং ইউক্রেন নীতিকে নিয়ে টানাপোড়েনের গুঞ্জন ছিল ।

আইসিসি ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান

মিলার বেশ কয়েকবার বলেছিলেন, “আমরা মনে করি না আইসিসি–এর এখতিয়ার রয়েছে”। তাদের যুক্তি ছিল, ইসরায়েল অনেকগুলো যুদ্ধাপরাধ তদন্ত করছে, তাই আইসিসি–কে দায়িত্ব পাওয়ার আগে সেগুলো দেখতে হবে। এই অবস্থান নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনা হয়। অনেক দেশ আইসিসি–এর স্বাধীন তদন্তের পক্ষে হলেও, যুক্তরাষ্ট্র তাদের অবস্থান রক্ষা করেছে ।

গাজায় মানবিক ও অর্থনৈতিক সংকট

স্বাস্থ্যসেবা বিপর্যয়

  • সরকারি হাসপাতাল: গাজার ৩৬টি সরকারি হাসপাতালে ২০টি আংশিক কার্যক্রম চালাচ্ছে, বাকিগুলো আংশিক বা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে গাজায় নিঃসন্দেহে যুদ্ধাপরাধ করেছে ইসরায়েল: ম্যাথু মিলার
  • স্বাস্থ্যসেবা আক্রমণ: ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত পশ্চিম তীরে ৬৯৪টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হামলা হয়, যার ফলে ২৬ জন নিহত এবং ১২১ জন আহত হয় ।
  • জনসংখ্যার স্বাস্থ্য ঝুঁকি: ৫ বছরের নিচের শিশুদের ৯০%–এর বেশি সংক্রামক রোগে আক্রান্ত, পুষ্টিহীনতার কারণে অন্তত ৩১ জন মারা যায়; এদের মধ্যে ২৮ জন শিশু ।

খাদ্য ও পানীয় জল সংকট

  • গাজার অধিকাংশ এলাকা পানীয় জল থেকে বঞ্চিত। ইউনিসেফ জানায়, ৯০% মানুষ নিরাপদ পানি পায় না। কৃষি ও অর্থনৈতিক অবকাঠামো ধ্বংসের ফলে খাদ্য সংকট বেড়েছে।
  • ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ওসিএইচএ–র পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ১৭–২৩ ফেব্রুয়ারি এক সপ্তাহে ৮,১০০ জন গাজার স্থানচ্যুত জনগণ ইউনরওয়ার–এর মানসিক সহায়তা পেয়েছে, ৬,৬০০ শিশু শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিয়েছে ।

স্থানচ্যুতি ও আশ্রয়

  • চলমান হামলা পর্বে গাজায় ২.১ মিলিয়ন মানুষ গৃহহীন হয়েছেন, অনেকে ১০ বার বা তার বেশি স্থানচ্যুত হয়েছেন ।
  • ইউনরওয়ার পরিচালিত ১১৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৯০,০০০ মানুষ বসবাস করছে; সেখানেও ঘন packed পরিবেশে জীবিকা–জীবিকা সঙ্কট দেখা দিয়েছে ।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংগঠন

  • জাতিসংঘ মানবাধিকার মিশন গাজায় “সম্ভব্য যুদ্ধাপরাধ” তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছে। তারা দাবি করেছে, ইসরায়েল বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ চালাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন ।
  • অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সহ অন্যান্য সংগঠনও ইসরায়েলকে “যুদ্ধাপরাধ” আরোপ করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান

যুক্তরাষ্ট্র সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে গাজায় “যুদ্ধাপরাধ” বলে মেনে নেয় না। তবে জনমতের চাপ ও আন্তর্জাতিক সমালোচনার কারণে কিছু নীতি–পরিবর্তন আনা হচ্ছে:

  • মানবিক সহায়তা খাতের বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে; তবে ইসরায়েলের নিরাপত্তা–পরামর্শের কারণে অনেক ত্রাণ দেরিতে পৌঁছায় ।
  • সেনেট ও প্রতিনিধি পরিষদের কিছু সদস্য “গাজায় স্থায়ী শান্তির জন্য প্রবল চাপ তৈরির ন্যায্যতা” উল্লেখ করে জাতিসংঘ ও আইসিসি–কে সমর্থন জানিয়েছে, যা মিলারের মতের সাথে সাংঘর্ষিক ।

৫.৩ মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে প্রভাব

গাজা সংকটের কারণে ফিলিস্তিনে অভ্যুত্থানের আশঙ্কা, প্রতিবেশী আরব রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক নড়বড়ে হচ্ছে।

  • মিশর, জর্ডান, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত জাতিসংঘের সাহায্যকে সমর্থন জানিয়েছে; তবে তারা কোনওরকম সামরিক হস্তক্ষেপে দ্বিধান্বিত ।
  • ইসরায়েলি সরকার বলছে, “হামাস সম্পূর্ণ বিনাশ না হওয়া পর্যন্ত তারা যুদ্ধ চালিয়ে যাবে”।

ভবিষ্যৎ পথ

শান্তি প্রক্রিয়া

ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে হবে; তবেই খাদ্য, চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের পথ উন্মুক্ত হবে। জাতিসংঘ, আমেরিকা, ইজিপ্ট এবং অন্যান্য মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোকে সক্রিয়ভাবে সংলাপ চালিয়ে যেতে হবে।

মানবিক সহায়তার অব্যাহত প্রবাহ

গাজার জামিন করা উচিত, যাতে খাদ্য, পানি, ওষুধ দ্রুত পৌছায়। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় করতে হবে, আর ইসরায়েলকে বাধা কমিয়ে দিয়ে মানবিক চালান সহজ করতে হবে।

আইনি জবাবদিহিতা

যুদ্ধাপরাধের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক আদালত বা জাতিসংঘের তদন্ত চালিয়ে আসতে হবে। ইসরায়েলসহ উভয় পক্ষের দায় কারোর ওপর চাপিয়ে নিয়ে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বিচার হওয়া জরুরী।

গাজায় সামরিক অপারেশনকে “যুদ্ধাপরাধ” বলার সাহসিকতা দেখিয়েছেন ম্যাথু মিলার। তার বক্তব্য আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য, মানবাধিকার ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার সূচনা করেছে। গাজায় ক্রমাগত নাগরিক দুর্ঘটনা, হাসপাতাল-বাতিল, খাদ্য সংকট ও শিশু মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়া মানবতা ও আইনের পরিপন্থি। বিশ্ব কমিউনিটির সক্রিয় হস্তক্ষেপের মাধ্যমে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সেবা পুনরায় চালু করা সবচেয়ে জরুরি। চাকচিক্য-প্রতিশ্রুতির বাইরেও, সত্যিকার শান্তি প্রতিষ্ঠায় সকল পক্ষকে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা চালাতে হবে। গাজার অবস্থা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে এর প্রভাব শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, গ্লোবাল নিরাপত্তা ও মানবাধিকারের স্বার্থেও প্রভাব ফেলবে।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button